এখানে দুটি খুবই সহজ রচনা আছে। সাথে অধ্যবসায় রচনা pdf ও আছে। একটি অধ্যবসায় রচনা ছোট। আরেকটা একটু বড় অধ্যবসায় রচনা।

অধ্যবসায় রচনা অথবা, অধ্যবসায় সফলতার চাবি
সংকেত : সূচনা অধ্যবসায় কী? অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা ও ছাত্রজীবনে অধ্যবসায় ও অধ্যবসায় ও প্রতিভা * অধ্যবসায় বিমুখের অবস্থা ও উপসংহার।
সূচনা : সফলতা মানবজীবনে সহজে আসে না। সফলতা পেতে হলে বারবার চেষ্টা করতে হয়। কোনো কাজে ব্যর্থ হলে হতাশ বা উৎসাহ না হারিয়ে বারবার চেষ্টা করার নাম অধ্যবসায়।
অধ্যবসায় কী? : অধ্যবসায় শব্দের অর্থ- অবিরাম সাধনা। কোনো কাজে সফল হওয়ার জন্য মানুষের ক্রমাগত চেষ্টা তার নামই অধ্যবসায়।
অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা : মানবজীবনে অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা আমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হারে হারে টের পাই। অধ্যবসায়ী না হলে কোনো জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না। পৃথিবীতে বাধা থাকবেই। এ বাধা অতিক্রম করার শক্তি যার যত বেশি সাফল্যও তার তত বেশি। তাই জীবনে উন্নতি লাভ করতে হলে অবশ্যই অধ্যবসায়ী হতে হবে। ছাত্রজীবনে অধ্যবসায় : ছাত্ররাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। অলস ও শ্রমবিমুখ ছাত্র-ছাত্রী জীবনে কখনও বিদ্যার্জন করতে পারে না। কোনো ছাত্রকে একবার বিফল হয়ে বসে থাকলে চলবে না। তাকে দ্বিগুণ উৎসাহে পুনরায় চেষ্টা করতে হবে। তবেই না সফলতা আসবে।
অধ্যবসায় ও প্রতিভা : শুধু প্রতিভা নিয়ে বসে থাকলে চলে না। কঠোর পরিশ্রম ও একনিষ্ঠ সাধনা ছাড়া কোনো কাজেই সফলতা লাভ করা যায় না। লেখাপড়া, সাহিত্য, শিল্প, গবেষণাসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতা নির্ভর করে অধ্যবসায়ের ওপর। সেজন্য বিজ্ঞানী নিউটন বলেছেন— প্রতিভা বলে কিছু নেই। পরিশ্রম ও সাধনা করে যাও, তা হলে প্রতিভাকে অগ্রাহ্য করতে পারবে। অধ্যবসায় বিমুখের অবস্থা : অধ্যবসায়হীন মানুষ অপদার্থ। তাদের দ্বারা জীবনে কোনো মহৎ কাজ সম্পাদন করা সম্ভব নয়। অধ্যবসায়ী ব্যক্তিরা জীবনে খুব সহজে সফলতার মুখ দেখে। কিন্তু অধ্যবসায় বিমুখ ব্যক্তিরা জীবনে সকল ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়।
উপসংহার : জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অধ্যবসায়ের প্রয়োজন। অধ্যবসায় ব্যতীত জীবনে কখনও সফলতা আসে না। একজন স্বল্পবিত্ত ব্যবসায়ী কঠিন অধ্যবসায়ের ফলে ব্যবসায়ে প্রভূত সাফল্য লাভ করতে পারে। একজন শিক্ষার্থী কঠোর অধ্যবসায়ের ফলে নিজের জীবনকে গৌরবময় করে গড়ে তুলতে পারে। তাই জীবনের সর্বক্ষেত্রে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো অধ্যবসায়।
এই অধ্যাবসায় রচনা টি তুলনামূলক একটু বড় ক্লাসের শিক্ষার্থীদের জন্য।আশা করি এই অধ্যবসায় রচনা একটি পড়ে তুমি উপকৃত হবেন
অধ্যবসায় রচনা
ভূমিকা : কোনো কাজে একবারে সফল হতে না পারলে তা সমাধা করতে বারবার চেষ্টা করার নাম অধ্যবসায়। প্রথমবারের চেষ্টায় কোনো মহৎ কাজ সম্পন্ন করা সব সময় সম্ভবপর নাও হতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে, ব্যর্থতা মেনে নিয়ে যে ব্যক্তি কাজটি ছেড়ে দেয়, সে জীবনে কখনো উন্নতি লাভ করতে পারে না। জীবনে চলার পথে প্রায়ই নানা বাধা-বিপত্তি উপস্থিত হয়। বহু কাজই তাই নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায় না। অনেক সময় কাজের সকল উদ্যম বিফলতায় পর্যবসিত হয়। কর্মী মানুষ কখনো এ ব্যর্থতাকে ভয় পায় না। কোনো কাজে ব্রতী হলে বারবার ব্যর্থ হয়েও সে হাল ছেড়ে দেয় না। আরব্ধ কাজ সম্পন্ন করার জন্য সে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যায়। এরূপ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াকেই অধ্যবসায় বলে।
অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা : জীবনের প্রতি ক্ষেত্রেই অধ্যবসায়ের প্রয়োজন আমরা উপলব্ধি করি। সংসারে মানুষের কর্মের পথে শত অন্তরায় থাকতে পারে। রোগ-শোক, দারিদ্র্য, নৈরাশ্য, দৈব দুর্ঘটনা ইত্যাদি অনেক সময় আমাদের যাত্রা পথে প্রবল প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। একমাত্র অধ্যবসায়ী ব্যক্তির পক্ষেই এসব বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়া সম্ভবপর। এজন্য তাকে বহু প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাবার শক্তি অর্জন করতে হয়। মানুষের জীবনে বিভিন্ন কাজে বাধা-বিপত্তি দেখা দিতে পারে। সেসব বাধাকে কিন্তু ভয় করলে চলে না। মনোবল ও দৃঢ়সঙ্কল্প নিয়ে অগ্রসর হতে পারলে সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করা যায়। অধ্যবসায় অবলম্বন করে ব্যর্থতার সোপান বেয়েই সফলতার চূড়ায় আরোহণ করার চেষ্টা করতে হয়। অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই আজ মানুষ প্রকৃতিকে জয় করেছে, সাগর থেকে মুক্তো আহরণ করছে এবং মহাশূন্যে পাড়ি জমাতে পেরেছে। সারে প্রতিটি কে সারাজীবন অসংখ্য বাধা-বিপত্তি ও বিরুদ্ধ শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। এরূপ ক্ষেত্রে অধ্যবসায়ের প্রয়োজনীয়তা সর্বাধিক।
ছাত্র জীবনে অধ্যবসায় : ছাত্র জীবনের সর্বক্ষেত্রেই অধ্যবসায়ের একান্ত প্রয়োজন রয়েছে। পাঠ্যবিষয় অনুধাবন করা থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি সাধন পর্যন্ত প্রতিটি প্রক্রিয়ায়, অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। পৃথিবীতে কোনো কিছুই সহজলভ্য নয়। বিনা পরিশ্রমে কোনো কিছুই অর্জন করা যায় না। সমাজজীবনের সর্বত্রই একধরনের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। ছাত্র জীবনে এ প্রতিযোগিতা সবচেয়ে বেশি। এতে জয়লাভ করতে হলে অধ্যবসায়ের প্রয়োজন। অধ্যবসায় ও প্রতিভা একে অপরের পরিপূরক। অনেকের ধারণা, অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী না হলে মহৎ কোন কাজ করা যায় না। এ কথা সত্য নয়। অধ্যবসায় ব্যতীত শুধু প্রতিভায় কাজ হয় না। অলস ও শ্রমবিমুখ শিক্ষার্থী প্রতিভার অধিকারী হলেও কখনোই আশানুরূপ ফল লাভ করতে পারে না।মেধার দিক থেকে কোনো শিক্ষার্থীর ঘাটতি থাকলে, অধ্যবসায় ও পরিশ্রম দিয়ে সে ওই ঘাটতি পূরণ করে নিতে পারে। তবে এ কথাও ঠিক যে, আদৌ মেধা না থাকলে কেবল অধ্যবসায়ের জোরে সবকিছু করা যায় না। অধ্যবসায়ের সঙ্গে যেখানে মেধার সমন্বয় ঘটে, সেখানে উন্নতি ও সাফল্য অনিবার্য।
অধ্যবসায়ের সুফল : অধ্যবসায় দ্বারা মানুষ জীবনে অসাধ্য সাধন করতে পারে। অলস ও কর্মবিমুখ লোকেরা অধ্যবসায়ের মাহাত্ম্য অনুধাবন করতে পারে না। কোনো কাজে হঠাৎ বাধার সম্মুখীন হলে, তারা কাজটি ছেড়ে দিয়ে হাত-পা গুটিয়ে পিছিয়ে পড়ে। তাদের আকাঙ্ক্ষা আছে, কিন্তু সঙ্কল্পের দৃঢ়তা নেই। এদের কাছে দেশ ও সমাজ বড় কিছু প্রত্যাশা করতে পারে না। প্রকৃত কর্মী মানুষকে ব্যর্থতার গ্লানি স্পর্শ করে না। বারবার ব্যর্থতা সত্ত্বেও তারা নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কাজে লেগে থাকে। অবশেষে সাফল্য তাদের পদানত হয়। জগতে যত কল্যাণকর, যত মহৎ কাজ আজ পর্যন্ত মানুষ করেছে, তা এমনি অধ্যবসায়ী লোকের দ্বারাই সম্পাদিত হয়েছে। অধ্যবসায়ের শক্তি যার যত বেশি, সে তত বেশি বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করতে পারে। মনীষীদের জীবন থেকে এ কথার সত্যতা উপলব্ধি করা যায়।
অধ্যবসায়ের দৃষ্টান্ত : জীবন-সংগ্রামে অধ্যবসায় যে সাফল্যের চাবিকাঠি, তার অসংখ্য প্রমাণ ইতিহাসে জীবন্ত হয়ে আছে। স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট ব্রুসের একটি কাহিনি অধ্যবসায়ের এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। রবার্ট ব্রুস ইংল্যান্ডের রাজা এড্ট্ওয়ার্ডের সঙ্গে পর পর ছয়বার যুদ্ধে পরাজিত হন। এরপর একদিন তিনি যুদ্ধ চিন্তায় নিমগ্ন আছেন, এমন সময় দেখতে পেলেন, একটি মাকড়সা দুটি কড়িকাঠে সুতা জড়াতে গিয়ে পরপর ছয়বার ব্যর্থ হলেও পরে সপ্তমবারের চেষ্টায় কৃতকার্য হয়। এতে অনুপ্রাণিত হয়ে রবার্ট ট্রুস সপ্তমবার যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে জয়লাভ করেন ও শত্রুকবল থেকে স্বদেশ উদ্ধার করতে সক্ষম হন। অধ্যবসায়ের আর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কলম্বাসের নতুন দেশ আবিষ্কার। কয়েকজনমাত্র সহচর নিয়ে একটি ক্ষুদ্র জাহাজে চড়ে তিনি সাগরের বুকে পাড়ি দিলেন এবং বহু বাধা-ি -বিঘ্ন অতিক্রম করে নতুন দেশ আবিষ্কারের গৌরব নিয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করলেন। এটি নিঃসন্দেহে তাঁর অধ্যবসায়ের বিজয়। আব্রাহাম লিঙ্কন, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন প্রমুখ মনীষীর জীবনও একই সত্যের পরিচয় বহন করে। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু উদ্ভিদের চেতনাশক্তি ও স্পন্দন সম্বন্ধে যে তত্ত্ব আবিষ্কার করেন, তা তাঁর অপরিসীম অধ্যবসায়েরই ফল। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও শেরেবাংলা এ. কে. ফজলুল হকের জীবনেও অধ্যবসায়ের নিদর্শন বিদ্যমান।
উপসংহার : জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে অধ্যবসায়ের একান্ত প্রয়োজন। অধ্যবসায়ী ব্যক্তির পক্ষেই জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব। এ বিজয়ের জন্য যা সবচেয়ে জরুরি, তা হলো আত্মবিশ্বাস। যাদের আত্মবিশ্বাস আছে, তারা জানে পরিশ্রম ও সাধনা দিয়ে পর্বতপ্রমাণ বাধাও অতিক্রম করা যায়। জাতীয় জীবনেও অধ্যবসায়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সমাজ পরিবর্তনের জন্য পৃথিবীতে যেসব আন্দোলন হয়েছে, তার পেছনেও অবদান রেখেছে অধ্যবসায়। অধ্যবসায়ী ব্যক্তি নিজের জীবনকে যেমন সার্থক ও সুন্দর করতে পারে, তেমনি দেশ ও জাতির মুখও উজ্জ্বল করতে পারে।
অধ্যবসায় রচনা এর পাশাপাশি আমাদের আরও অন্যান্য রচনা।
রচনা স্বদেশপ্রেম খুবই সহজ এবং সুন্দর
কম্পিউটার রচনা সকল শ্রেণির 3-10 easy
অধ্যবসায় রচনা এর পাশাপাশি অধ্যবসায় সম্পর্কে জানুন
অধ্যবসায় রচনা টি পড়ে আপনার কেমন লাগলো সেটি নিচে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না
Galib Riad4:12 am
খুব উপকার হলো, দারুণ লিখেছেন।