আমার প্রিয় শিক্ষক রচনা for class 5
অথবা, আমার প্রিয় শিক্ষক রচনা
সংকেত : সূচনা ও আমার প্রিয় শিক্ষক ও প্রিয় হওয়ার কারণ যোগ্যতা ও পড়ানোর নিয়ম ও চরিত্র উপসংহার।
সূচনা : ছাত্রজীবনে যার সাথে সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক থাকে তিনি আমাদের শিক্ষক। ছাত্রদের কাছে তাদের সকল শিক্ষকই প্রিয়। তবে ক্ষেত্র বিশেষে কোনো কোনো ছাত্রের কাছে কোনো কোনো শিক্ষক বিশেষভাবে প্রিয় হয়ে ওঠেন। তেমনি আমারও একজন প্রিয় শিক্ষক আছেন।
আমার প্রিয় শিক্ষক : আমি মৈশাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির একজন ছাত্র। আমি আমাদের বাংলা শিক্ষক আল-আমীন স্যারকে সর্বাধিক পছন্দ করি। তাঁর প্রতিভার জন্য আমি তাঁকে শ্রদ্ধা ও প্রশংসা করি। তাঁর শিক্ষার পদ্ধতি আমাদের সবাইকে প্রীত করে।
প্রিয় হওয়ার কারণ : আল-আমীন স্যার আমাদের বাংলা পড়ান। তিনি বাংলা বিষয় শ্রেণিতে খুব সহজ করে বুঝিয়ে পড়ান। তাঁর পাঠদান সবাইকে মুগ্ধ করে। তাঁর উচ্চারণ যেমন সুস্পষ্ট ও বিশুদ্ধ তেমনি হাতের লেখাও অতিসুন্দর। তিনি সবসময় হাসিমুখে কথা বলেন। তাই তিনি আমার প্রিয় শিক্ষক।
যোগ্যতা : আমার প্রিয় শিক্ষক আল-আমীন স্যার বাংলা বিষয়ে এম এ পাশ। তা ছাড়া তাঁর রয়েছে ২০-২৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা।
পড়ানোর নিয়ম : আল-আমীন স্যারের পাঠদান পদ্ধতি একটু ভিন্ন ধরনের। তিনি প্রতিদিন ঠিক সময়ে ক্লাসে আসেন। ব্ল্যাকবোর্ড পরিষ্কার করে তিনি তাতে সে দিনের পাঠ লেখেন। তারপর ছাত্র- ছাত্রীদের নানা উদাহরণ দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে তিনি অনেক কঠিন বিষয়কে খুব সহজ করে বুঝিয়ে দেন। ছাত্ররা মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শোনে। এককথায় তাঁর পাঠদান পদ্ধতি এতো ভালো যে, সকল ছাত্র-ছাত্রী খুব সহজে বুঝে নিতে পারে।
চরিত্র : আল-আমীন স্যারের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র। দীর্ঘ দশ বছর এ স্যারের কাছে পড়া হলো। আজ পর্যন্ত তাঁর কোনো ত্রুটি আমি পাইনি। আমরা তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভক্তি করি। তাঁর মতো সৎ চরিত্রবান শিক্ষককে আমাদের মাঝে পেয়ে আমরা ধন্য।
উপসংহার : বিদ্যালয়ের সকল স্যারকেই আমি শ্রদ্ধা করি। তবে আমার প্রিয় শিক্ষক আল-আমীন স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা একটু বেশি। তিনি আমাদের বিদ্যালয়ের গৌরব। এমন একজন আদর্শ-শিক্ষকের সংস্পর্শে আসতে পারার সৌভাগ্যের জন্য আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি।
আমার প্রিয় শিক্ষক রচনা ৫ম শ্রেণি পাশাপাশি অন্যান্য রচনা করুন পডুন
আমাদের গ্রাম রচনা সকল শ্রেণির জন্য 3-10
স্বাধীনতা দিবস রচনা সকল শ্রেণির জন্য 3-10
বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা ছোট ও সহজ
আমার প্রিয় শিক্ষক রচনা ৫ম শ্রেণি রচনা এখানে শেষ
পাট রচনা ৫ম শ্রেণী
ভূমিকা : পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। পৃথিবীর প্রায় শতকরা পঁচাত্তর ভাগ পাট বাংলাদেশে উৎপন্ন হয় পাট রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। পাট গাছ থেকে প্রাপ্ত সোনালি রঙের আঁশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ সোনার মতো মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে বলে পাটকে বাংলাদেশের সোনালি আঁশ বলা হয়।
আকৃতি ও প্রকারভেদ : পাট একপ্রকার সরু কাণ্ডবিশিষ্ট উদ্ভিদ। এ গাছ সাধারণত ছয় থেকে দশ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। বীজ বোনার পর এটা দণ্ডের মতো উপরের দিকে বাড়ে। এর শাখা-প্রশাখা নেই বললেই চলে। গাছের মাথায় কিছু সবুজ পাতা থাকে। মাথার দিকে কয়েকটি ছোট ছোট ডালের মতো দেখা যায়। বাংলাদেশে তিন ধরনের পাট জন্মে। এগুলো হলো সুতি, বগী ও মেস্তা।
প্রাপ্তিস্থান : বাংলাদেশে পৃথিবীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পাট উৎপাদিত হয়। ভারতের আসাম, বিহার, উড়িষ্যা ও তামিলনাড়ুতে পাটের চাষ হয়। বর্তমানে চীন, আমেরিকা, মিশর ও থাইল্যান্ডে কিছু কিছু পাট উৎপন্ন হচ্ছে। বাংলাদেশের পাটই সবচেয়ে উন্নতমানের। ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ঢাকা ও ফরিদপুর জেলায় প্রচুর পরিমাণে পাট জন্মে। এছাড়া রংপুর ও রাজশাহীতেও পাট উৎপন্ন হয়।
উৎপত্তিস্থান ও জলবায়ু : মৌসুমি অঞ্চলের উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু পাট চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। প্রচুর বৃষ্টিপাত পাট চাষের সহায়ক। পলি-বিধৌত সমভূমি ও উর্বর দো-আঁশ মাটিতে পাট ভালো জন্মে। পাটের জমি অপেক্ষাকৃত নিচু ও ঢালু হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ মৌসুমি অঞ্চলের দেশ এবং এ দেশে নদ-নদীর পলি-বিধৌত বিশাল সমভূমি বিদ্যমান। এজন্য পাট উৎপাদনের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্থান সর্বোচ্চ।
উৎপাদন প্রণালি : পাট চাষ অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। জমি উত্তমরূপে কর্ষণ করে সার প্রয়োগের পর বীজ বপন করতে হয়। সাধারণত ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে বীজ বপন করা হয়। চারা গজাবার পর নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা তুলে ফেলতে হয়। এভাবে কয়েকবার আগাছা পরিষ্কার করতে হয়। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে পাটগাছগুলো কেটে ডুবিয়ে রাখতে হয় এবং এ অবস্থায় পাটগাছ পচে যায়। তারপর গাছ থেকে আঁশ ছাড়িয়ে নিয়ে পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হয়। শুকিয়ে গেলে আঁশগুলো গাঁট বাঁধা হয় এবং বিক্রির জন্য তৈরি করা হয়।
প্রয়োজনীয়তা : পাট আমাদের অনেক কাজে লাগে। পাট দিয়ে চট, বস্তা, ব্যাগ, দড়ি, কাছি, সুতা, কাপড় ও কার্পেট তৈরি করা হয়। উৎকৃষ্ট পাটের আঁশ সূক্ষ্ম, চিকন ও রেশমের মতো। এ আঁশ দ্বারা উন্নতমানের মসৃণ বস্ত্র তৈরি করা যায়। পাট থেকে মাদুর, শিকা, থলে, গদি প্রভৃতি শিল্পজাত দ্রব্যও প্রস্তুত করা হয়। পাটকাঠি জ্বালানি রূপে ব্যবহৃত হয়। দরিদ্র লোকেরা পাটখড়ি দিয়ে ঘরের বেড়া তৈরি করে। বাংলাদেশের গবেষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সবুজ কাঁচা পাট থেকে উচ্চমানের কাগজের মণ্ড তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। হার্ডবোর্ড ও পারটেক্সের প্রধান কাঁচামালও পাটকাঠি। পাটের আঁশের সঙ্গে তুলো মিশিয়ে জুটন নামে একটি আঁশ উৎপাদন করা হয়। এ জুটন থেকে বিভিন্ন ধরনের কাপড় তৈরি করা যায়।
বাংলাদেশে পাট শিল্প : বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি পাট। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানায় ৭৭টি পাটকল ছিল। বর্তমানে কিছু পাটকল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ পাটকল আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দেয়াতে পাট শিল্পের প্রচুর ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পাট উৎপাদনকারী কৃষকেরা পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। ফড়িয়া ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে বেশি। বিদেশে পাটের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পাটের বিকল্প আবিষ্কৃত হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পাটের চাহিদা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। তবে পাট শিল্পের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা গঠিত হয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে এ দেশের পাট শিল্পকে বাঁচাবার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
উপকারিতা : পাট বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত উপকারী কৃষিজাত দ্রব্য। বিভিন্ন পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে বাংলাদেশ। তাছাড়া দেশের বহু পাটকলে অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এতে বেকার সমস্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এভাবে পাট ও পাটজাত দ্রব্য এ দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করছে।
অপকারিতা : পাটের অনেক উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু অপকারিতাও আছে। পাট পচা পানি দূষিত ও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। এই দূষিত পানিতে মশা জন্ম নেয়। মশার কারণে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে। ম্যালেরিয়ার প্রকোপ জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকিস্বরূপ। তাছাড়া অধিক পাট বোনার ফলে ধান চাষের প্রচুর বিঘ্ন ঘটে। পাট চাষ অধিকতর ব্যয়সাপেক্ষ। উৎপাদিত পাটের ন্যায্যমূল্যও কৃষকেরা পায় না।
উপসংহার : বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে পাটের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এই পাটের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। এ দেশের লক্ষ লক্ষ কৃষক পাট চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষকদের সীমাহীন পরিশ্রমে উৎপাদিত পাট থেকে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হলেও দরিদ্র কৃষকদের অবস্থার কোনো উন্নতি হয় না। পাটের নিম্নতম মূল্য বেঁধে দিয়ে পাটচাষ ও পাটচাষি উভয়কে রক্ষা করা সরকারের কর্তব্য। পাট উৎপাদনে চাষি ও সরকার উভয়েরই যত্নবান হওয়া উচিত। আমরা পাটকে বাঁচালে পাট আমাদেরকে বাঁচাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
পাট রচনা ৫ম শ্রেণী পাশাপাশি অন্যান্য রচনা করুন পডুন
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণি
জাতীয় ফুল শাপলা রচনা ২০০ শব্দ