আহসান মঞ্জিল(ahsan manzil)-আহসান মঞ্জিলের ইতিহাস(ahsan manzil history)

আহসান মঞ্জিল

আহসান মঞ্জিল(ahsan manzil) কোথায় অবস্থিত-আহসান মঞ্জিল রচনা

আহসান মঞ্জিল(ahsan manzil) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা, যা পূর্বে ঢাকার নবাব পরিবারের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এবং ঢাকার অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।

ইতিহাস

নির্মাণ ও প্রতিষ্ঠা: আহসান মঞ্জিলের(ahsan manzil) ইতিহাস শুরু হয় ১৯শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। এটি নির্মাণ করেন ঢাকার নবাব আবদুল গনি। ১৮৫৯ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৮৭২ সালে সম্পূর্ণ হয়।

নবাব পরিবারের বসবাস: আহসান মঞ্জিল(ahsan manzil) মূলত ঢাকার নবাব পরিবারের বাসভবন ছিল। নবাব আবদুল গনির পুত্র নবাব আহসানউল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় “আহসান মঞ্জিল”। এটি ছিল নবাব পরিবারের প্রশাসনিক এবং সামাজিক কেন্দ্র।

বিপর্যয় ও পুনর্নির্মাণ: ১৮৮৮ সালে এক ভয়াবহ টর্নেডোতে আহসান মঞ্জিল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর নবাব আহসানউল্লাহ পুনরায় এর সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করেন। নবাব পরিবারের জন্য এটি নতুনভাবে সাজানো হয়।

স্বাধীনতা পরবর্তী অবস্থা: বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, আহসান মঞ্জিল একটি সংগ্রহশালায় পরিণত হয়। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার এটি সংরক্ষণ এবং পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘরের আওতায় রয়েছে এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

স্থাপত্য

আহসান মঞ্জিলের স্থাপত্যশৈলী মূলত ইউরোপীয় ও মুঘল স্থাপত্যের মিশ্রণ। এর অভ্যন্তরীণ সজ্জা এবং বাহ্যিক নকশা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। এর প্রধান ভবনটি দুই তলা বিশিষ্ট এবং এতে একটি বড় বারান্দা রয়েছে, যা বুড়িগঙ্গা নদীর দিকে মুখ করে আছে।

আহসান মঞ্জিল(ahsan manzil)

প্রধান বৈশিষ্ট্য:

  • বিশাল প্রবেশদ্বার এবং মার্বেল পাথরের সিঁড়ি
  • শৈল্পিকভাবে নকশা করা কক্ষ ও হল
  • সুউচ্চ গম্বুজ এবং কারুকার্যময় দরজা ও জানালা

আহসান মঞ্জিলের সংগ্রহশালায় নবাব পরিবারের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, ছবি এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন প্রদর্শিত হয়। এটি বাংলাদেশের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।

পর্যটন আকর্ষণ

বর্তমানে আহসান মঞ্জিল একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন অনেক পর্যটক এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি দেখতে আসেন। এর ইতিহাস ও স্থাপত্য শৈলী পর্যটকদের মুগ্ধ করে এবং এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

আহসান মঞ্জিল একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র

আহসান মঞ্জিল কেন বিখ্যাত

আহসান মঞ্জিল তার সমৃদ্ধ ইতিহাস, স্থাপত্য শৈলী, এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বের কারণে বিখ্যাত। এর কিছু প্রধান কারণ হলো:

ঐতিহাসিক গুরুত্ব

  1. নবাব পরিবারের বাসভবন: আহসান মঞ্জিল ছিল ঢাকার নবাব পরিবারের প্রধান বাসভবন। এটি নবাবদের প্রশাসনিক ও সামাজিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হত।
  2. ঐতিহাসিক ঘটনাবলি: এই প্রাসাদটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময়ে, এটি বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আগমনের কেন্দ্র ছিল।

স্থাপত্যশৈলী

  1. ইউরোপীয় ও মুঘল স্থাপত্যের মিশ্রণ: আহসান মঞ্জিলের স্থাপত্যশৈলী ইউরোপীয় এবং মুঘল স্থাপত্যের মিশ্রণে নির্মিত। এর সুন্দর ও নকশাদার গম্বুজ, কারুকার্যময় দরজা ও জানালা, এবং সুদৃশ্য মার্বেল পাথরের সিঁড়ি স্থাপনাটিকে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
  2. দৃষ্টিনন্দন অভ্যন্তরীণ সজ্জা: প্রাসাদের অভ্যন্তরীণ সজ্জা এবং নকশা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। এতে বিভিন্ন শৈল্পিক কারুকাজ, চিত্রকলা এবং আসবাবপত্র রয়েছে যা ঐ সময়ের শিল্পকলা এবং সংস্কৃতির পরিচায়ক।

সাংস্কৃতিক গুরুত্ব

  1. সংগ্রহশালা: বর্তমানে আহসান মঞ্জিল একটি সংগ্রহশালা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যেখানে নবাব পরিবারের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, ছবি এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত।
  2. পর্যটন আকর্ষণ: আহসান মঞ্জিল একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন অনেক পর্যটক এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি দেখতে আসেন এবং এর ইতিহাস ও স্থাপত্য শৈলী উপভোগ করেন।

এই সকল কারণ মিলিয়ে আহসান মঞ্জিল বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি অন্যতম প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

আহসান মঞ্জিল কোন নদীর তীরে অবস্থিত-ahsan manzil location

আহসান মঞ্জিল বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। বুড়িগঙ্গা নদী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর মধ্যে একটি এবং এর তীরে আহসান মঞ্জিলের অবস্থান এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

আহসান মঞ্জিল কবে বন্ধ থাকে-আহসান মঞ্জিল সময় সূচি২০২৪

ahsan manzil off day-ahsan manzil opening time-ahsan manzil open and close time

আহসান মঞ্জিল প্রতি বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে। এছাড়া সরকারি ছুটির দিনেও এটি বন্ধ থাকতে পারে। তাই পরিদর্শনের আগে আহসান মঞ্জিলের বর্তমান খোলার সময়সূচি যাচাই করে নেয়া উত্তম।

বৃহস্পতিবার: সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা
শুক্রবার: সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা
শনিবার: সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা
রবিবার: বন্ধ

আহসান মঞ্জিল টিকেট কত টাকা-আহসান মঞ্জিল টিকেট-ahsan manzil tickets

আহসান মঞ্জিল-এর টিকিট-আহসান মঞ্জিল টিকেট মূল্য-ahsan manzil ticket-ahsan manzil ticket price

আহসান মঞ্জিলে প্রবেশের জন্য টিকেট মূলত তিনটি ধরণের হয়ে থাকে, তা হলো:

  1. বাংলাদেশী পরিদর্শকদের জন্য:
    • প্রত্যেক বৃহস্পতিবারে ও সরকারি ছুটির দিনে: ১০০ টাকা
  2. বিদেশি পরিদর্শকদের জন্য:
    • প্রতি বিদেশি পরিদর্শক: ২০০ টাকা
  3. বালক-কিশোর ও প্রাক-বৃদ্ধ পরিদর্শকদের জন্য:
    • বাংলাদেশী ও বিদেশি সমস্ত পরিদর্শক: ৫০ টাকা

ahsan manzil museum tickets

আহসান মঞ্জিল এর টিকেট কাটার নিয়ম-আহসান মঞ্জিল-এর টিকিট

আহসান মঞ্জিলে প্রবেশের জন্য টিকেট কাটার নিয়ম সাধারণত এমন হলো:

  1. টিকেট ক্রয়: প্রবেশকারীরা প্রবেশ দেওয়ার জন্য টিকেট ক্রয় করতে হবে। টিকেট ক্রয় করা যায় প্রবেশ পয়েন্ট থেকে বা অনলাইনে যেমন প্রয়োজন হবে।
  2. প্রদর্শন: টিকেট ক্রয়ের সময় প্রবেশকারীরা টিকেটটি প্রদর্শন করতে হবেন যাতে তাদের অনুমতি প্রমাণিত হয়।
  3. ভিত্তিতে প্রবেশ: টিকেট ক্রয়ের পর, প্রবেশকারীরা নির্দিষ্ট সময়ে বা সীমাবদ্ধ সময়ে আহসান মঞ্জিলে ঢুকতে পারেন। সাধারণত সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত টিকেট বৈধ থাকে।
  4. সাপ্তাহিক বন্ধনী: সাপ্তাহিক বন্ধনীর দিনগুলিতে আহসান মঞ্জিল বন্ধ থাকতে পারে। তাই টিকেট ক্রয়ের আগে বন্ধনীর সময়সূচি যাচাই করা উচিত।

আহসান মঞ্জিল সম্পর্কে তথ্য

আহসান মঞ্জিল ঢাকার একটি ঐতিহাসিক এবং পর্যটন স্থল। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলির মধ্যে পরিগণিত। এর নির্মাণ কার্য শুরু হয় ১৮৫৯ সালে এবং পূর্ণতা লাভ করে ১৮৭২ সালে। এটি নবাব আবদুল গনি কর্তৃক নির্মিত হয় এবং তার পুত্র নবাব আহসানউল্লাহর নামে পরিচিত। আহসান মঞ্জিলের স্থাপত্যশৈলী ইউরোপীয় এবং মুঘল স্থাপত্যের মিশ্রণে নির্মিত, এবং এর মধ্যে বিশাল প্রবেশদ্বার, মার্বেল পাথরের সিঁড়ি, এবং অভ্যন্তরীণ সজ্জা অত্যন্ত চমৎকার। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ জাদুঘর হিসেবে পরিচালিত হয় এবং পর্যটন স্থল হিসেবে জনপ্রিয়।

আহসান মঞ্জিল কে নির্মাণ করেন

আহসান মঞ্জিল নির্মাণ করেন নবাব আবদুল গনি, যার পুত্র নবাব আহসানউল্লাহ নামে পরিচিত। তিনি এই মঞ্জিলটি নির্মাণ করেন তাঁর পরিবারের আধীনে, যা ১৮৫৯ সালে শুরু হয় এবং ১৮৭২ সালে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। তাঁর পুত্র নবাব আহসানউল্লাহ এই মঞ্জিলে অসাধারণ স্থাপত্য এবং সাংস্কৃতিক ধর্মতা যুক্ত করেন, যা বর্তমানে একটি অনযান্য ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে পরিচিত।

ahsan manzil online ticket

আহসান মঞ্জিলের অনলাইন টিকেট ক্রয়ের সময় সাধারণত এমন হয়:

  1. প্রথমে আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজারে যান এবং আহসান মঞ্জিলের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অনুসন্ধান করুন।
  2. ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর, “টিকেট বুকিং” বা “ভিজিট সময়” সেকশনে যান।
  3. আপনার পছন্দের পরিদর্শন তারিখ ও সময় চয়ন করুন।
  4. সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করুন এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
  5. টিকেটটি ইমেইল অথবা মোবাইল ফোনে প্রাপ্ত করুন এবং প্রবেশের সময় সেই টিকেটটি প্রদর্শন করুন।

এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে আপনি সহজেই আহসান মঞ্জিলের পরিদর্শনের জন্য অনলাইনে টিকেট ক্রয় করতে পারবেন।



About author

saikat mondal

Welcome to www.banglashala.com. Banglashala is a unique address for Bengali subjects. banglashala is an online learning platform for Bengalis. So keep learning with us




Leave a Reply

nineteen + four =