স্বাধীনতা দিবস রচনা সকল শ্রেণির জন্য 3-10

রচনা

স্বাধীনতা দিবস রচনা ২০০  শব্দ

অমর একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা

সূচনা : একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনের একটি মহান দিন। এ দিনে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করে। আর তাঁর জন্য করতে হয়েছিল আন্দোলন এবং দিতে হয়েছিল জীবন। তাই একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের প্রাণের চেয়েও প্রিয়।

মাতৃভাষা বাংলা : আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে এ ভাষার ব্যবহার চলে আসছে। এ ভাষায় আমরা সহজেই আমাদের মনের ভাব প্রকাশ করি। এ ভাষার কাব্যসাহিত্য শত বছর আগেই পেয়েছে নোবেল প্রাইজ। কাজেই বাংলা আমাদের গর্বের ভাষা।

বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ : বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের আগে ছিল পাকিস্তানের অধীন। পাকিস্তানিরা ওদের উর্দু ভাষা আমাদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। আমাদের দেশের মানুষ তা মেনে নেয়নি। এর বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ করেছে, মিছিল করেছে, সভা-সমাবেশ করেছে। আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে ১৯৫২ সালে গঠন করেছে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।’ পাকিস্তানিরা ভয় পেয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে জারি করেছে ১৪৪ ধারা। কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতা ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল করে রাজপথে নেমেছে। পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। তারপর গুলি চালাতে শুরু করেছে। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে। আহত হয়েছে অনেক। সারাদেশের মানুষের তীব্র আন্দোলনের মুখে। পাকিস্তানিরা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়েছে।

উপসংহার : পৃথিবীর কোথাও মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনদানের ইতিহাস নেই। বাংলাভাষীরা সেই অনন্য ইতিহাস তৈরি করেছে। এই সূত্রেই একুশে ফেব্রুয়ারি এখন ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। বাংলা ভাষার ব্যাপক চর্চা ও উৎকর্যের মাধ্যমে এ সম্মান সমুন্নত রাখতে হবে।

স্বাধীনতা দিবস রচনা ৫০০ শব্দ

মহান স্বাধীনতা দিবস রচনা

ভূমিকা : ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয়। আমাদেরজাতীয় জীবনে এ দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম। এই গৌরবোজ্জ্বল দিনটিতে আমরা নতুন চেতনা লাভ করি। এই দিনটি আমাদেরজীবনে বিশেষ তাৎপর্য নিয়ে উপস্থিত হয়। আমরা বিশেষ মর্যাদাসহকারে এ দিনটি উদযাপন করি।

ইতিহাস : ছাব্বিশে মার্চের ইতিহাস আমাদের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র জনগণের ওপর যে নিঠুর হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল এবং জনগণ যে প্রতিরোধের সূচনা করেছিল তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ মার্চকে আমাদের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ মুক্ত হলেও পুনরায় তা পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শোষণের শিকার হয়ে পড়ে। পাকিস্তানিরা বাঙালিদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করে। এ দেশের অধিবাসীদের মনে রুমে অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে। বাঙালিরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। পাকিস্তানি শাসকচক্র সুকৌশলে বাঙালিদের ওপর দমন নীতি চালাতে থাকে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান পেরিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত এসে উপনীত হয় বাঙালির সংগ্রাম। অবশেষে ২৬ মার্চ শুরু হয় তীব্র ও ব্যাপক মুক্তিযুদ্ধ। পঁচিশে মার্চ রাতের ভয়াল রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র মানুষের ওপর। শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা। এ দেশের মানুষ ভয়ঙ্কর মূর্তিতে অবতীর্ণ হয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে।

পাকিস্তানি হায়েনার দল নিরীহ জনগণের ওপর অত্যাচার চালাতে থাকে। আমাদের বাঙালি সৈনিক, আধাসামরিক বাহিনী, পুলিশ, আনসার তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গ্রামে, গঞ্জে, শহরে, বন্দরে প্রতিটি স্থানে পাকিস্তানি বাহিনীর সম্মুখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। শত্রুরা আরো নারকীয় হত্যাকাণ্ডে মেতে ওঠে। এ দেশের ছাত্র-জনতা, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। রণকৌশল আয়ত্ত করা ও শক্তি সঞ্চয় করার লক্ষ্যে মুক্তিকামী জনতা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে আশ্রয় গ্রহণ করে। মুজিবনগরে বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। সে সরকারের সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন জেনারেল এম.এ.জি. ওসমানী। জেনারেল ওসমানীর ওপর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কের দায়িত্বও দেওয়া হয়। তাঁর নেতৃত্বে কঠোর সংগ্রামের মধ্যদিয়ে এ দেশের দামাল ছেলেরা দখলদার বাহিনীর কবল থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় হয় এই দিনে— এটি আমাদের বিজয় দিবস। বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। ত্রিশ লক্ষ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে আর তিন লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়ে কেনা আমাদের এই অমূল্য স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা আমাদের গৌরব, আমাদের অহঙ্কার।

উপসংহার : প্রতি বছর এ স্বাধীনতা দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে ঘুরে ঘুরে আসে। অফুরন্ত আনন্দ-উৎফুল্লতায় আমরা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি। এ দেশের উন্নয়নে আত্মোৎসর্গ করার শপথ নিয়ে থাকি। যে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তির আশায় আমরা একদিন যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সে মুক্তি অর্জন সম্ভব হয়েছে কি না ভেবে দেখার সময় এসেছে। মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। অর্জিত স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। আমাদের স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে লক্ষ লক্ষ শহিদের অমর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। বহু আত্মত্যাগের ফলে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ আমরা লাভ করেছি। যে অগণিত শহিদ বুকের রক্ত দিয়ে আমাদের জন্য একটি স্বাধীন বাসভূমি রেখে গেছে, আমরা আজ তাঁদের পবিত্র স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। রাজনৈতিক স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তিও একটি জাতির কাম্য। আমাদের জাতির জীবনে হাজারো সমস্যার সমাহার। জাতিকে সকল সমস্যা থেকে মুক্ত করতে পারলেই স্বাধীনতা অর্থবহ হতে পারে। দেশকে দুর্নীতি থেকে রক্ষা করে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারলেই স্বাধীনতার গৌরব অক্ষুণ্ন রাখা যাবে। স্বাধীনতা দিবসে এটিই আমাদের কাম্য হওয়া উচিত।

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন

প্রশ্ন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে?

উত্তর: ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস।

প্রশ্ন: কততম স্বাধীনতা দিবস ২০২২?

উত্তর: ৫১তম স্বাধীনতা দিবস।

প্রশ্ন: কততম স্বাধীনতা দিবস ২০২৩?

উত্তর: ৫২তম স্বাধীনতা দিবস।

প্রশ্ন: একুশে ফেব্রুয়ারি কি দিবস?

উত্তর: স্বাধীনতা দিবস।

প্রশ্ন: একুশে ফেব্রুয়ারি কি?

উত্তর: স্বাধীনতা দিবস।



About author

saikat mondal

Welcome to www.banglashala.com. Banglashala is a unique address for Bengali subjects. banglashala is an online learning platform for Bengalis. So keep learning with us




Leave a Reply

19 + 13 =