কম্পিউটার রচনা সকল শ্রেণির 3-10 easy

রচনা
কম্পিউটার রচনা, কম্পিউটার রচনা ৫ম শ্রেণী, কম্পিউটার রচনা class 5, কম্পিউটার রচনা ক্লাস ৫, কম্পিউটার রচনা class 4, কম্পিউটার রচনা ১০ম শ্রেণি, কম্পিউটার রচনা পঞ্চম শ্রেণী, কম্পিউটার রচনা class 7

এখানে পরপর দুটি কম্পিউটার রচনা আছে প্রথম কম্পিউটার রচনা টি তুলনামূলক ছোট ক্লাসের জন্য এবং দ্বিতীয় কম্পিউটার রচনাটি তুলনামূলক বড় ক্লাসের জন্য

নিচের কম্পিউটার রচনা ছোটদের জন্য

কম্পিউটার রচনা

সংকেত : সূচন ও কম্পিউটার কী ও কম্পিউটার আবিষ্কার ও কম্পিউটারের ব্যবহার ও কম্পিউটারের গুরুত্ব ও উপসংহার।

সূচনা : বিজ্ঞান বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে মানব সভ্যতাকে এক উঁচু স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। নানা রকম আবিষ্কার মূলত বিজ্ঞানেরই ফসল। কম্পিউটার মানবজীবনে যে স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে এনেছে তা রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। কম্পিউটারের সাহায্যে মানুষ আজ এক বছরের পথ এক ঘণ্টায় অতিক্রম করতে পারে।

কম্পিউটার কী : কম্পিউটার একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র বিশেষ। কম্পিউটার শব্দটি ইংরেজি হলেও এটি ল্যাটিন শব্দ কম্পোট থেকে এসেছে। যার আধুনিক নাম গণনাকারী যন্ত্র। এটি এমন একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সকল প্রকার গাণিতিক হিসাব-নিকাশ, সহজ যুক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ফলাফল প্রদান করতে সক্ষম।

কম্পিউটার আবিষ্কার : বৃটিশ নাগরিক বিশিষ্ট গাণিতিক চার্লস ব্যাবেজ আধুনিক কম্পিউটারের জনক। তিনি আধুনিক ক্যালকুলেটর-এর মূলনীতি প্রণয়নে সক্ষম হন। ১৯৪৪ সালে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও আই.বি.এম কোম্পানীর যৌথ উদ্যোগে তার ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কম্পিউটার বাণিজ্যিকভাবে সফলতা লাভ করে।

কম্পিউটারের ব্যবহার : আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার উজ্জ্বলতম সফলতা আজকের কম্পিউটার। রান্না হতে শুরু করে মহাকাশ ভ্রমণ পর্যন্ত এ কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। আজকের কম্পিউটারের সাহায্যে সমস্ত কার্যাবলি দ্রুত ও সঠিকভাবে সমাধান করার পেছনে যে জিনিসটি সর্বোত্তমভাবে কাজ করছে তাকে বলা হয় প্রোগ্রাম।

কম্পিউটারের গুরুত্ব : বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় সর্বক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। সামান্য কাজ থেকে শুরু করে জটিল কাজও কম্পিউটার সমাধান করতে পারে। রাশিয়া কম্পিউটার প্রযুক্তিতে এতো উন্নতি লাভ করেছে যে, সে দেশের অনেক কল-কারখানায় সব কাজ কম্পিউটার দ্বারা করা হয়। আবার আমেরিকা ও কানাডায় বড় বড় কৃষি খামারে কম্পিউটারের প্রচলন শুরু হয়েছে। এমন কী গরু, ছাগলকে খাওয়ার জন্য কৃষকের কোনো কাজ করতে হয় না। সুইচ টিপ দিলেই খাবার এসে হাজির হয়। আধুনিককালে মানুষের মহাকাশ বিজয়ের কাজে সর্বাধিক সহায়ক শক্তি হলো কম্পিউটার।

উপসংহার : আধুনিককালে মানবজাতির কল্যাণের জন্য কম্পিউটারের অবদান অপরিসীম। কম্পিউটার মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। তাই বিশ্ববাসীর শান্তি, নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-যাপনে কম্পিউটার অভিশাপ নয় আশীর্বাদ হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত।

নিচের কম্পিউটার রচনা বড়দের জন্য

কম্পিউটার রচনা

ভূমিকা : বিজ্ঞান মানবসভ্যতার চালিকাশক্তি। প্রকৃতির শক্তিকে নিজের প্রয়োজনে নিয়োগ করতে গিয়ে যুগে যুগে মানুষ নানাযন্ত্রের আবিষ্কার করেছে। এদের মধ্যে আধুনিকতম সংযোজনই হলো কম্পিউটার। যন্ত্র আজ মানুষের জীবনে এমন আরাম এনেদিয়েছে, যা সে একসময় কল্পনাও করতে পারেনি।

এরূপ একটি যন্ত্র আজ মানুষের মস্তিষ্কের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে এগিয়েএসেছে। মস্তিষ্কের ক্ষমতাসম্পন্ন এ যন্ত্রটির নামই কম্পিউটার। ‘কম্পিউটার’ শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘কম্‌পিউটেয়ার’ থেকে,যার আভিধানিক অর্থ গণনাকারী বা পরিগণক যন্ত্র। কিন্তু কম্পিউটার এখন আর গণনাই শুধু করে না, বরং তার কাজের পরিধি এখন অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত।

আবিষ্কার ও ক্রমোন্নতি : কম্পিউটার একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রোনিক যন্ত্র। এর উদ্ভব ও ক্রমোন্নতির পেছনে বহু মানুষের বহু বছরের সাধনা ও প্রচেষ্টার স্বাক্ষর রয়েছে। গণিতবিদ প্যাসকেল ১৬৪২ সালে প্রথম যোগ-বিয়োগের কার্যক্ষমতাসম্পন্ন গণনাকারী যন্ত্র বা ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেন। গুণ ও ভাগের ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যালকুলেটর উদ্ভাবন করেন গডফ্রাইড লেবনিজ ১৬৭১ সালে।

ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস্ ব্যাবেজই হলেন আধুনিক কম্পিউটারের স্বপ্নদ্রষ্টা। ১৮১২ সালে তিনি একটি ফর্মুলা উদ্ভাবন করেন, যা মানুষের মস্তিষ্ককে সহায়তা করতে পারে। আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কারের কৃতিত্বের অধিকারী হলেন হাওয়ার্ড অ্যাকিন নামেএকজন মার্কিন বৈজ্ঞানিক। ১৯৩৭ সালে তিনি এমন এক যন্ত্র উদ্ভাবন করেন যা অনায়াসে জটিল অঙ্কের সমাধান দিতে পারত।

সাত বছর পর ১৯৪৪ সালে হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও আই.বি.এম. কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কম্পিউটারতৈরি হয়। ১৯৪৬ সালে আবিষ্কৃত হলো প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইলেকট্রোনিক কম্পিউটার ‘ইনিয়াক’।

গঠনপ্রণালি : কম্পিউটারের পাঁচটি অংশ বা উপাদান থাকে। এগুলো হলো : ইনপুট, আউটপুট, মেমোরি, কন্ট্রোল ও এরিথমেটিক। ‘ইনপুট’ তথ্য ও নির্দেশ গ্রহণ করে। ‘আউটপুট’ ফলাফল প্রকাশ করে। ‘মেমোরি’তে সকল তথ্য ও ফলাফল সংরক্ষিত হয়। ‘কন্ট্রোল’ কম্পিউটারের বিভিন্ন ইউনিটের কার্যাবলি সমন্বয়সাধন করে। ‘এরিথমেটিক’ ইউনিট বিভিন্ন গাণিতিক ও যৌক্তিক ক্রিয়াদি সম্পাদন করে। মেমোরি, কন্ট্রোল ও এরিথমেটিক-কে একত্রে বলা হয় ‘সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট’ বা কম্পিউটারের মগজ। তথ্য ও নির্দেশ প্রবেশ করানোর জন্য কম্পিউটারে এক বিশেষ ভাষার প্রয়োজন হয়। একে ‘প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ’ বলে। প্রত্যেক কম্পিউটারের একটি নিজস্ব মেশিন-ভাষা আছে। কম্পিউটারকে তার নিজের ভাষায় নির্দেশ দিতে হয়, কেননা, কম্পিউটার কেবল তার নিজের ভাষাটিই বোঝে।

একটি কম্পিউটারের পদ্ধতিতে প্রধান দিক দুটি থাকে। যেমন— কম্পিউারের যান্ত্রিক সরঞ্জাম বা হার্ডওয়্যার এবং প্রোগ্রাম সামগ্রী বা সফট্ওয়্যার।

উপকারিতা : বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধকে কম্পিউটারের যুগ বলা যায়। কম্পিউটার আজকাল মানুষকে নানাভাবে সাহায্য করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে মহাশূন্য-বিজয় পর্যন্ত সর্বত্রই এখন কম্পিউটারের জয়-জয়কার। বিমা, ব্যাংক, অফিস, আদালত, টেলিযোগাযোগ, রেলওয়ে, বিমান, ডাক বিভাগ, ছাপাখানা ইত্যাদি প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার এখন পাকাপোক্তভাবে বসে গেছে। কম্পিউটার সাফল্যের সঙ্গে ভাষা অনুবাদ করে দিতে পারে।

আমেরিকায় বড় বড় কৃষি খামারে কৃষক নিজের ঘরে বসে সুইচ টিপছে আর মেশিন কম্পিউটারের মাধ্যমে জমি চাষ করা, জমিতে সার দেওয়া, বীজ বপন করা ও শস্য কাটা থেকে শস্য মাড়াই পর্যন্ত সকল কাজই সম্পন্ন করে দিচ্ছে। কম্পিউটার এখন প্লেন, ট্রেন ও জাহাজ চালায় এবং এগুলোর আসন সংরক্ষণ করে। কম্পিউটার ব্যবসার লাভজনক পদ্ধতি বলে দিতে পারে এবং মুহূর্তের মধ্যে বিমা, আয়কর ইত্যাদির হিসাব কষে দিতে পারে। কম্পিউটার রোগীর রোগ নির্ণয় করতে পারে, দাবা খেলতে পারে ও কোনো মানুষের কণ্ঠস্বর শুনে তাকে শনাক্ত করতে পারে। কম্পিউটার এখন উকিলের কাছে পুরানো মামলার তথ্য হাজির করে। আজকাল বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল কম্পিউটারের বদৌলতে অতি কম সময়ে প্রকাশ করা সম্ভবপর হচ্ছে। মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পে দ্রুত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে কম্পিউটারেরই কারণে।

কম্পিউটারের বিস্ময়কর অবদান : কম্পিউটার বিস্ময়কর ক্ষমতার অধিকারী। বিজ্ঞানের অবদানসমূহের মধ্যে কম্পিউটারই সর্বশ্রেষ্ঠ। মানুষের মস্তিষ্কের বিকল্প হিসেবে মানুষের তৈরি যন্ত্র হওয়া সত্ত্বেও কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা বর্তমানে মানুষের ক্ষমতাকে অতিক্রম করে গেছে।

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় কম্পিউটারের ভূমিকা বিস্ময়কর। ডিজিটাল টেলিফোন, সেল্যুলার টেলিফোন, ই-মেইল, ই-কমার্স, ইন্টারনেট— এই সবই কম্পিউটারের বিস্ময়। সুদূর মঙ্গলগ্রহে প্রেরিত পাথফাইন্ডার ও সোজার্নারকে পৃথিবী থেকে রিমোটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর হয়েছে কম্পিউটারেরই বদৌলতে। কম্পিউটার অসাধ্য সাধন করছে। কম্পিউটার তার স্মৃতিতে গ্রন্থের পর গ্রন্থ সংরক্ষণ করতে পারে এবং প্রয়োজনে মুহূর্তের মধ্যে তা উপস্থাপিত করতে পারে। কম্পিউটারের কাজের গতি, বিশুদ্ধতা ও মেমোরিতে ধরে রাখার ক্ষমতা মানুষের অনুরূপ ক্ষমতার তুলনায় অনেক উন্নত।

 কম্পিউটার ও বেকার সমস্যা : কম্পিউটারের শক্তি সীমাহীন— তার ক্ষুধা দানবীয়। যে কাজ নিজের হাতে করতে হলে মানুষের অনেক ‘সময়’, অনেক ‘শক্তি’ ও অনেক ‘লোকবলে’র প্রয়োজন হয়, সে কাজ অতি অল্প সময়ে কম্পিউটার একা সম্পাদন করতে পারে। ফলে বহু ক্ষেত্রে অটোমেশিন বসানোর কারণে শ্রমিক উৎখাত করা হচ্ছে এবং বেকারদের দীর্ঘশ্বাস বেড়ে গেছে। উন্নয়নশীল দেশসমূহে কম্পিউটারের প্রচলনের আবশ্যকতাও বেশি অনুভূত হচ্ছে, আবার এই কম্পিউটারের কারণে এসব

দেশে বেকার সমস্যার তীব্রতাও ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে কম্পিউটারের অপরিসীম গুরুত্ব ও উপযোগিতার তুলনায় এর ক্ষতিকর প্রভাবের ব্যাপারটি নিতান্তই তুচ্ছ।

উপসংহার : বেকার সমস্যা বেড়ে গেলেও বিজ্ঞানের আশীর্বাদ থেকে মানুষ পিছিয়ে থাকতে পারে না। কম্পিউটারের আগমন যেমন অপরিহার্য, তার অগ্রগতিও তেমনি অনিবার্য। বর্তমান বিশ্বের বিস্ময় এ যন্ত্রটিই বলে দিতে পারে কোন পথে আমাদের সাফল্য, কোন পথে ব্যর্থতা। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি সম্প্রসারণ অতি আবশ্যক। কম্পিউটারকে যাতেমানুষের কল্যাণেই কেবল নিয়োগ করা যায়, উন্নত দেশসমূহের সেদিকে লক্ষ রাখা উচিত।

আমাদের অন্যান্য রচনা

একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস রচনা

বিজয় দিবস রচনা সকল শ্রেণির জন্য

কম্পিউটারের ইতিহাস সম্পর্কে এখান থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন

কম্পিউটারের ইতিহাস জানুন



About author

saikat mondal

Welcome to www.banglashala.com. Banglashala is a unique address for Bengali subjects. banglashala is an online learning platform for Bengalis. So keep learning with us




Leave a Reply

seventeen − fifteen =