what is diabetes
ডায়াবেটিস(diabetes) একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যার সৃষ্টি করে।
এটি প্রধানত দুই ধরনের হয়:
types of diabetes
- টাইপ ১ ডায়াবেটিস: এই ক্ষেত্রে, শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদক কোষগুলোকে আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে। এর ফলে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত শিশু বা কিশোর বয়সে বেশি দেখা যায়।
- টাইপ ২ ডায়াবেটিস: এই ক্ষেত্রে, শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত পরিমাণে নয় বা শরীরের কোষগুলো ইনসুলিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না (ইনসুলিন প্রতিরোধ)। এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে বর্তমান সময়ের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে যুবা ও শিশুদের মধ্যেও এটি দেখা যাচ্ছে।
ডায়াবেটিস(diabetes) নিরাময়যোগ্য নয়, তবে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এর জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা, ওষুধ বা ইনসুলিন ইনজেকশন গ্রহণ (যদি প্রয়োজন হয়) করতে হয়।
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ-ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
ডায়াবেটিসের লক্ষণ-diabetes symptoms
ডায়াবেটিসের প্রধান লক্ষণগুলো হল:
- অতিরিক্ত পিপাসা: বারবার তৃষ্ণা লাগে এবং প্রচুর পানি পান করার প্রয়োজন হয়।
- ঘন ঘন প্রস্রাব: বিশেষ করে রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য উঠতে হয়।
- অতিরিক্ত ক্ষুধা: সাধারণের চেয়ে বেশি ক্ষুধা লাগে।
- ওজন হ্রাস: কোন কারণ ছাড়াই ওজন কমে যায় (বিশেষত টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে)।
- ক্লান্তি ও দুর্বলতা: শরীর সবসময় ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভব করে।
- অস্পষ্ট দৃষ্টি: দৃষ্টিতে ঝাপসা বা অস্পষ্ট দেখা যায়।
- ক্ষত বা কাটা জায়গা ধীরে ধীরে সারা: কোন ক্ষত বা কাটা জায়গা ধীরে সারে।
- চামড়ার সংক্রমণ: ত্বকে সংক্রমণ সহজে হয় এবং সহজে ভালো হয় না।
- হাত ও পায়ে ঝিনঝিন অনুভূতি: হাত ও পায়ের আঙ্গুলে ঝিনঝিন বা সুঁই ফোটানোর মতো অনুভূতি।
- চামড়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা: বিশেষ করে গলায় এবং বগলে কালো দাগ দেখা যায়।
ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলি অনেক সময় খুব সূক্ষ্ম হতে পারে এবং তাই প্রাথমিক অবস্থায় এগুলো উপেক্ষা করা সহজ হয়। তাই যদি এই লক্ষণগুলির কোনটি দেখতে পান, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু প্রধান উপায় রয়েছে:
- খাদ্য পরিবর্তন করুন: প্রথমেই আপনার খাবারের পরিমাণ ও প্রকৃতি পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ রাখুন। কার্বোহাইড্রেট ও শর্করা যুক্ত খাবারের পরিমাণ হ্রাস করুন এবং প্রোটিন ও সব্জির পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে ব্যায়াম করা উচিত, যেমন হাঁটুচালি, যোগাসন, ব্যাস্ত জীবনযাপন সম্পর্কিত ব্যায়াম করা।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: যদি আপনি মোটামুটি, তবে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য কোশানুকোশি প্রয়াস করুন।
- নিয়মিত চেকআপ: নিয়মিত চেকআপ করে ডায়াবেটিসের অগ্রগতি ও পরিচর্যা করতে হবে।
- পরামর্শ অনুসরণ করুন: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করুন, ঔষধ সঠিকভাবে নিন এবং প্রেসক্রাইব করা পরীক্ষাগুলি নিন।
এই সব পদক্ষেপের সাথে কাজ করলে আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক হতে পারেন। তবে, আপনার চিকিৎসকের সাথে সকল পরামর্শের সাথে আপনার নিজের পরিস্থিতি ও আচরণের সাথে সাজুসজ্জিত হওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ-diabetes range
ডায়াবেটিসের জন্য বিভিন্ন পয়েন্ট এবং রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে যা বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত মেয়াদী ডায়াবেটিস পরীক্ষা হলো ফাস্টিং প্লাসমা গ্লুকোজ লেভেল এবং হেমোগ্লোবিন এইচবিএস১সি (HbA1c) মাপ। সাধারণত, নিম্নলিখিত সুস্পষ্টতা অনুসারে ডায়াবেটিস ধরা যেতে পারে:
- ফাস্টিং প্লাসমা গ্লুকোজ লেভেল: ১২৬ মিলিগ্রাম/ডিসিলিটার বা তার বেশি।
- হেমোগ্লোবিন এইচবিএস১সি (HbA1c): ৬.৫% বা তার বেশি।
এছাড়াও, অন্যান্য ধরণের পরীক্ষাগুলি এবং বৈশিষ্ট্য যেমন বয়স, ওজন, রক্তচাপ, পরিবারে ডায়াবেটিস সম্পর্কিত ইত্যাদি রয়েছে যা সম্ভবত ডায়াবেটিসের জন্য আপনার ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে সাহায্য করতে পারে। যদি আপনার বা কারো ডায়াবেটিক সম্পর্কে চিন্তা থাকে, তাহলে নিকটস্থ চিকিত্সকের সাথে আলোচনা করা উচিত।
সুগার লেভেল কত হলে ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস নির্ধারণের জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা হয় এবং সাধারণত তিনটি প্রধান পরীক্ষা ব্যবহার করা হয়: খালি পেটে রক্তে শর্করার পরীক্ষা (Fasting Blood Sugar), অরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট (OGTT), এবং HbA1c (গ্লাইকেটেড হিমোগ্লোবিন) পরীক্ষা। নিচে এই পরীক্ষাগুলির মানদণ্ড দেওয়া হলো:
খালি পেটে রক্তে শর্করার পরীক্ষা (Fasting Blood Sugar)
- স্বাভাবিক (নরমাল): ৭০-৯৯ mg/dL
- প্রি-ডায়াবেটিস: ১০০-১২৫ mg/dL
- ডায়াবেটিস: ১২৬ mg/dL বা তার বেশি
অরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট (OGTT)
এই পরীক্ষায়, রক্তে শর্করার মাত্রা মাপা হয় খালি পেটে এবং তারপর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ পান করার ২ ঘণ্টা পরে:
- স্বাভাবিক (নরমাল): ১৪০ mg/dL এর কম
- প্রি-ডায়াবেটিস: ১৪০-১৯৯ mg/dL
- ডায়াবেটিস: ২০০ mg/dL বা তার বেশি
HbA1c (গ্লাইকেটেড হিমোগ্লোবিন) পরীক্ষা
এই পরীক্ষা শেষ ২-৩ মাসের গড় রক্তে শর্করার মাত্রা নির্দেশ করে:
- স্বাভাবিক (নরমাল): ৫.৭% এর নিচে
- প্রি-ডায়াবেটিস: ৫.৭% – ৬.৪%
- ডায়াবেটিস: ৬.৫% বা তার বেশি
এই মানগুলির ভিত্তিতে, চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস নির্ধারণ করেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ দেন। যদি আপনি ডায়াবেটিস নিয়ে চিন্তিত হন, তবে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে পরীক্ষা করানো উচিত।
ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
ডায়াবেটিস সম্পর্কে সাধারণত আমরা ধরে নেই যে, ডায়াবেটিস রোগীর গ্লুকোজ মাত্রা কত হলে তার অবস্থা নরমাল বলা হয়। ডায়াবেটিসের জন্য নরমাল গ্লুকোজ মাত্রা সাধারণত রক্তে 70-130 মিলিগ্রাম প্রতি ডিসিলিটার (মিলিগ্রাম/ডিএল) হয়। তবে, প্রতিটি রোগীর জন্যে এই মান পরিবর্তণ হতে পারে এবং ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট এবং চিকিৎসার সাথে সম্পর্কিত অনেক আরও পরিমাণ গবেষণা এবং পরামর্শের প্রয়োজন হতে পারে।
ডায়াবেটিসের স্থিতি পরীক্ষা করার জন্য সাধারণত গ্লাইকেমিক ইন্ডেক্স (Glycemic Index) এবং হেমোগ্লোবিন এইচবিএম (HbA1c) পরীক্ষাগুলি ব্যবহার করা হয়। গ্লাইকেমিক ইন্ডেক্স পরীক্ষায় ডায়াবেটিসের স্থিতি পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে নরমাল মান ৭০ কিংবা তার নিচের হতে হয়।
খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
খালি পেটে (যেটি সাধারণত ৮-১০ ঘণ্টা রোজা থাকার পর) রক্তে শর্করার মাত্রা নরমাল হিসাবে বিবেচিত হওয়ার জন্য কিছু সাধারণ নির্দেশিকা রয়েছে। এগুলি সাধারণত মিলিগ্রাম পার ডেসিলিটার (mg/dL) এ পরিমাপ করা হয়।
খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রার জন্য সাধারণ নির্দেশিকা:
- স্বাভাবিক (নরমাল): ৭০-৯৯ mg/dL
- প্রি-ডায়াবেটিস: ১০০-১২৫ mg/dL
- ডায়াবেটিস: ১২৬ mg/dL বা তার বেশি
এই মানগুলির মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা নির্ধারণ করা হয় এবং চিকিৎসকরা সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা মাপার আগে ৮-১০ ঘণ্টা কিছু না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
- আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
- খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কার্যকলাপ, ওষুধ এবং জীবনযাত্রার অন্যান্য উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ ডায়াবেটিস নিয়ে চিন্তিত হন, তবে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়
ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম হলে জীবন সংকটাপন্ন হতে পারে। যদিও নির্দিষ্ট একটি মাত্রা নির্ধারণ করা কঠিন, তবে সাধারণত নিম্নলিখিত অবস্থাগুলি বিপজ্জনক হতে পারে:
- হাইপারগ্লাইসেমিয়া (উচ্চ রক্তে শর্করা):
- রক্তে শর্করার মাত্রা যদি ৩৫০-৪০০ mg/dL এর বেশি হয় এবং তা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তবে তা কিটোঅ্যাসিডোসিস বা হাইপারগ্লাইসেমিক হাইপারসমোলার স্টেট (HHS) এর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
- এই অবস্থাগুলি জীবনসংকটাপন্ন হতে পারে এবং চিকিৎসা জরুরি।
- হাইপোগ্লাইসেমিয়া (নিম্ন রক্তে শর্করা):
- রক্তে শর্করার মাত্রা যদি ৭০ mg/dL এর নিচে নেমে যায়, তবে তা হাইপোগ্লাইসেমিক শকের কারণ হতে পারে।
- যদি রক্তে শর্করার মাত্রা ৪০ mg/dL এর নিচে নেমে যায়, তবে তা জীবনসংকটাপন্ন হতে পারে এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
যদি কোনো ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে উপরের যে কোনো অবস্থার লক্ষণ দেখা দেয়, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে
বর্তমানে ডায়াবেটিসের চিরতরে নিরাময়ের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এটি কীভাবে করা যায় তার কিছু উপায়:
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- নিয়মিত ব্যায়াম: শারীরিক কার্যকলাপ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
- ওষুধ গ্রহণ: অনেক ডায়াবেটিস রোগীকে ইনসুলিন বা অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করতে হয়।
- নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা: রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ।
- চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ: নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রেখে চলা।
তবে গবেষকরা ডায়াবেটিসের চিরস্থায়ী নিরাময়ের উপায় নিয়ে কাজ করছেন, তাই ভবিষ্যতে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হতে পারে।
কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে-কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না
ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এমন কিছু খাবার রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে যে ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়, তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক কিছু খাবার:
- সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, কেলে, ব্রকলি ইত্যাদি সবজি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- বেরি জাতীয় ফল: স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাসবেরি ইত্যাদি ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক।
- পুরো শস্য: ব্রাউন রাইস, ওটমিল, কোয়িনোয়া ইত্যাদি পুরো শস্য খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- মাছ: স্যামন, ম্যাকরেল, সারডিন ইত্যাদি মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- বাদাম: বাদাম, আখরোট, চিয়া সিড ইত্যাদি প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক।
- মশলা ও ভেষজ: দারুচিনি, মেথি, আদা ইত্যাদি মশলা ও ভেষজ রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়ক।
এছাড়া, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান, এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কোন ফল খেলে ডায়াবেটিস কমে
কিছু ফল রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। তবে ফলগুলি সঠিক পরিমাণে এবং নিয়মিত খাওয়া উচিত। নিচে এমন কিছু ফলের তালিকা দেওয়া হলো যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে:
- বেরি (Berry):
- স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাসবেরি ইত্যাদি।
- এই ফলগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- আপেল (Apple):
- আপেলে প্রচুর ফাইবার এবং ভিটামিন সি থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
- কমলা (Orange):
- কমলায় ভিটামিন সি ও ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- পেয়ারা (Guava):
- পেয়ারা ভিটামিন সি ও ফাইবার সমৃদ্ধ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- চেরি (Cherry):
- চেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
- কিউই (Kiwi):
- কিউই ভিটামিন সি, ভিটামিন কে এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ফল খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত:
- পরিমাণে সীমাবদ্ধ থাকা: একবারে বেশি পরিমাণে ফল না খাওয়া।
- গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বিবেচনা করা: যে ফলগুলির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, সেগুলি বেছে নেওয়া।
- চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এই ফলগুলি নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডায়াবেটিস হলে কি কি সবজি খাওয়া যাবে না
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু সবজি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত, কারণ এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। সাধারণত, উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত সবজি এড়ানো বা কম পরিমাণে খাওয়া উচিত। নিচে এমন কিছু সবজির তালিকা দেওয়া হলো যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সীমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো:
- আলু:
- আলুতে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে।
- মিষ্টি আলু:
- মিষ্টি আলুতে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে, তাই এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
- কর্ন (ভুট্টা):
- ভুট্টাতে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে এবং এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।
- গাজর (পাকা গাজর):
- পাকা গাজরে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে, তাই এটি কম পরিমাণে খাওয়া উচিত।
- বীট:
- বীটে প্রাকৃতিক শর্করা বেশি থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।
- পিস (মটর):
- মটরে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা বেশি থাকে এবং এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু সুপারিশ:
- কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত সবজি: পালং শাক, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শশা ইত্যাদি সবজি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
- ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি: ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি যেমন লেটুস, কাঁচা গাজর (সীমিত পরিমাণে), শিম, বেগুন ইত্যাদি রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
- পর্যাপ্ত পানি পান: সবজি খাওয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত।
খাবারের পরিকল্পনা করার সময় একজন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া সর্বদাই ভালো।
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু খাবার এড়ানো বা সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত কারণ এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এড়ানো ভালো:
মিষ্টি ও শর্করাযুক্ত খাবার
- ক্যান্ডি, মিষ্টি, পেস্ট্রি
- কুকিজ, কেক
- আইসক্রিম, ডোনাট
- মিষ্টি পানীয় (সফট ড্রিংকস, ফলের রস, চিনি যুক্ত চা বা কফি)
পরিশোধিত শস্য ও উচ্চ-কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার
- সাদা রুটি, সাদা চাল
- পাস্তা, নুডলস
- কর্নফ্লেকস, অন্যান্য মিষ্টি সিরিয়াল
- আলু, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই
উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার
- ফাস্ট ফুড (ব্র্গার, পিজ্জা)
- ভাজা খাবার
- প্যাকেটজাত স্ন্যাকস (চিপস, ক্যানডি বার)
- প্রসেসড মাংস (সসেজ, বেকন)
মিষ্টি ফল ও শুকনো ফল
- আঙ্গুর, কলা, আম
- শুকনো খেজুর, কিসমিস, শুকনো আপেল
অন্যান্য উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার
- কুমড়া, মিষ্টি আলু (সীমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো)
- পপকর্ন, কর্নফ্লাওয়ার
পানীয়
- অ্যালকোহল (বিশেষ করে মিষ্টি ও ককটেল ধরনের পানীয়)
- সুগারযুক্ত স্পোর্টস ড্রিংকস
- এনার্জি ড্রিংকস
পরামর্শ
ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত:
- কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার
- উচ্চ ফাইবার যুক্ত খাবার
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
- স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (যেমন অ্যাভোকাডো, বাদাম, অলিভ অয়েল)
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আগে এবং সঠিক পরামর্শের জন্য অবশ্যই একজন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাদ্য তালিকা এমনভাবে তৈরি করা উচিত যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়, এবং সুস্থ জীবনযাত্রা বজায় থাকে। নিচে একটি সাধারণ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খাদ্য তালিকা দেওয়া হলো:
প্রাতঃরাশ (Breakfast)
- ওটমিল বা পুরো শস্যের সিরিয়াল (চিনি ছাড়া) দুধ দিয়ে
- ব্রাউন ব্রেড বা পুরো শস্যের রুটি, একটি সেদ্ধ ডিম বা ডিমের সাদা অংশ
- নন-ফ্যাট বা লো-ফ্যাট দই
- টাটকা ফল (যেমন বেরি, আপেল, নাশপাতি)
মধ্য সকালের খাবার (Mid-Morning Snack)
- কিছু বাদাম (যেমন বাদাম, আখরোট, চিয়া সিড)
- একটি টুকরো ফল (যেমন কিউই, পেয়ারা)
দুপুরের খাবার (Lunch)
- ব্রাউন রাইস বা কোয়িনোয়া
- গ্রিলড বা বেকড মাছ, মুরগির বুক বা টফু
- সবুজ শাকসবজি (যেমন পালং শাক, ব্রকলি, বাঁধাকপি)
- ডাল বা মসুর ডাল
বিকেলের নাস্তা (Afternoon Snack)
- সবুজ চা বা লেবু চা
- স্যালাড (সবজি, লেটুস, টমেটো, শসা, অলিভ অয়েল ড্রেসিং সহ)
রাতের খাবার (Dinner)
- গমের রুটি বা রুটি
- গ্রিলড বা বেকড চিকেন, মাছ বা সবজি
- সেদ্ধ সবজি (যেমন ফুলকপি, ব্রকলি, মটর)
- স্যালাড (যেমন শসা, টমেটো, গাজর, লেটুস)
রাতে হালকা খাবার (Bedtime Snack)
- একটি ছোট আপেল বা এক মুঠ বাদাম
- নন-ফ্যাট বা লো-ফ্যাট দই
গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন: দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে চেষ্টা করুন: ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- সঠিক পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করুন: প্রোটিন শরীরের পেশী বজায় রাখতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার বেছে নিন: এই ধরনের খাবার ধীরে ধীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়।
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আগে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সঠিক পরামর্শের জন্য অবশ্যই একজন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
birdem hospital diabetes doctor list
Here is a list of some of the diabetes and endocrinology specialists at BIRDEM Hospital in Dhaka:
- Prof. Dr. SM Ashrafuzzaman
- Qualifications: MBBS (DMC), DEM (DU), MD (Endocrinology), FAACE (USA)
- Specialty: Diabetes, Hormone & Thyroid Specialist
- Visiting Hours: Monday & Wednesday, 3 PM (by appointment)
- Contact: +8801847259770
- Prof. Dr. A.K. Azad Khan
- Qualifications: MBBS (Dhaka), D-Phil, FCPS (Medicine), FRCP (UK)
- Specialty: Medicine & Gastroenterology
- Dr. Feroz Amin
- Qualifications: MBBS, MD (Endocrinology), FACE (USA)
- Specialty: Diabetes & Hormone Specialist
- Prof. Dr. Zafar A Latif
- Qualifications: MBBS (DMC), FCPS (Medicine), FACE (USA)
- Specialty: Medicine & Diabetes Specialist
- Dr. Sultana Marufa Shefin
- Qualifications: MBBS, MD (Endocrinology)
- Specialty: Endocrinology (Hormone, Diabetes, Thyroid & Medicine) Specialist
- Dr. Md. Jubaidul Islam
- Qualifications: MBBS, CCD (BIRDEM), FCPS (Medicine), MACP (USA)
- Specialty: Medicine & Diabetes Specialist
- Additional Chamber: Khidmah Hospital, Khilgaon, Dhaka
- Consulting Hours: 7 PM – 10 PM (daily)
- Contact: +8809606063030
- Dr. Shahana Parveen
- Qualifications: MBBS, DEM
- Specialty: Diabetes & Hormone Specialist
- Additional Chamber: Ibn Sina Medical Imaging Center, Zigatola
- Consulting Hours: 7:30 PM – 8:30 PM (except Friday)
- Contact: +8801711625173
For more details on the doctors and their schedules, you can visit the official BIRDEM Hospital website or other related medical directories (Doctor Bangladesh) (Razu Aman) (Hospitals & Doctors).
diabetes machine price in bd-diabetes machine price in bangladesh
বিশেষত, ডায়াবেটিস মেশিনগুলির দাম বাংলাদেশে ব্রাণ্ড এবং প্রকারের উপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত রক্ত গ্লুকোজ মিটার এর দাম প্রায় BDT 500 থেকে BDT 2,000 এর মধ্যে হতে পারে। অধিক উন্নত টাইপের যেমন Continuous Glucose Monitoring (CGM) সিস্টেম এবং ইনসুলিন পাম্প, তাদের দাম প্রায় BDT 20,000 থেকে BDT 1,00,000 এবং তার ওপর হতে পারে। বিশেষ দরকারে স্থানীয় মেডিকেল সাপ্লাই স্টোর অথবা অনলাইন রিটেইলারদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।