নীতিবিদ্যা দর্শনের এমন একটি শাখা যা মানুষের আচরণের ভালো-মন্দ, ঔচিত্য-অনৌচিত্য, ন্যায়-অন্যায়
প্রভৃতি দিক সম্পর্কে আলোচনা করে। নৈতিকতার সাথে আইনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, আর সে কারণে
নীতিবিদ্যায় নৈতিকতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। অনেক আইন নৈতিকতার ভিত্তিতে সুদৃঢ় করে এবং আচরণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। ফলে, অনিবার্যভাবেই আইনের বিষয়বস্তু নৈতিকতার আলোচ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
নীতিবিদ্যা ও আইনের সম্পর্ক : নীতিবিদ্যা দর্শনের এমন একটি শাখা যা মানুষের অধিকার নিয়ে আলোচনা করে।
আইন মানুষের অধিকার নিয়ে আলোচনা করে। নৈতিকতা ও আইনের সম্পর্কে ঘনিষ্ঠ। আইন নৈতিকতার ভিত্তিকে মজবুত করে। নিচে নৈতিকতা ও আইনের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আলোকপাত করা হলো :
নৈতিকতা ও আইনের সাদৃশ্যাবলি :
১. নীতিবিদ্যা ও আইন ব্যক্তিগত কল্যাণ নিয়ে আলোচনা করে।
২. মানব কল্যাণ নীতিবিদ্যাও আইনের প্রধান লক্ষ্য।
৩. নীতিবিদ্যাও আইন সামাজিক কল্যাণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৪. নীতিবিদ্যা ও আইন মানুষকে নৈতিকতা শেখায়।
নীতিবিদ্যা ও আইন বাস্তব জীবনে নৈতিক মূল্য সংরক্ষণ করেএবং প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে।
৫. নৈতিকতা আইনের ভিত্তি। আইন দ্বারা নৈতিকতা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
নৈতিকতা ও আইনের বৈসাদৃশ্যাবলি:
১. নৈতিকতা আইনের জনক। কিন্তু আইন তা নয়।
২. নৈতিকতা না থাকলে আইন চলে না। কিন্তু আইন ছাড়া নৈতিকতা চলতে পারে।
৩. নীতিবিদ্যা ভালো-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় আচরণ বিশ্লেষণ করে । আর আইন কল্যাণ নিয়ে চিন্তিত ।
৪. মানব আচরণ নীতিবিদ্যার মূল বিষয়। আইনের মূল বিষয় হলো : ব্যক্তি সমষ্টি।
পরিশেষে বলা যায়, নৈতিকতা ও আইন মূল্যবোধের উপর নির্ভরশীল। সামাজিক আইন নৈতিকতার বিপরীত হলে তা সমাজে সহজে কার্যকর হয় না। তাই নীতিবিদ্যাও আইন স্বতন্ত্র বিষয় বলা যায়। কেননা, উভয়ের মধ্যেই সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য বিরাজমান। তবে কল্যাণ লাভ তাদের লক্ষ্য।