গণতন্ত্র অর্থ জনগণের শাসন। গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করে। তবে জনগণ সরাসরি অথবা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালনা করে থাকে। এর উপর ভিত্তি করে গণতন্ত্রকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। যথা : প্রত্যক্ষ বা বিশুদ্ধ গণতন্ত্র এবং পরোক্ষ বা প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র।
প্রত্যক্ষ বা বিশুদ্ধ গণতন্ত্র : যে সরকার ব্যবস্থায় জনগণ প্রত্যক্ষভাবে বা সরাসরি নিজেরাই দেশের শানকার্যে অংশগ্রহণ করে শাসনকার্য পরিচালনা করে তাকে প্রত্যক্ষ বা বিশুদ্ধ গণতন্ত্র বলে। এ রকম শাসনব্যবস্থায় জনগণই সরকারি যাবতীয় কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে। মনীষী বার্ন, প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় বলেছেন, “Direct democracy is a Democratic form of government is one in which the community as a whole directly or immediately without agents on representatives perform the function of sovereignty.”
পরোক্ষ গণতন্ত্র : পরোক্ষ গণতন্ত্রে নির্দিষ্ট সময় অন্তর জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত করে এবং এ
নির্বাচিত প্রতিনিধির উপরই শাসনব্যবস্থা বা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে। অর্থাৎ তাদের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকে এরূপ শাসনব্যবস্থাকে পরোক্ষ গণতন্ত্র বলা হয়। পরোক্ষ গণতন্ত্র সম্পর্কে জন স্টুয়ার্ড মিল বলেছেন, “It is a form of government where the whole people or some numbers portion of them exercise the governing power though deputies periodically elected by themselves.”
পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক জাতীয় রাষ্ট্রসমূহের বিশালায়তন, বিপুল জনসংখ্যা ও জটিল প্রকৃতির নানাবিধ সমস্যার কারণে প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, বৃহদায়তন ও জনবহুল রাষ্ট্রে পরোক্ষ গণতন্ত্রই বিশেষ উপযোগী এবং কাম্য।