১৯২০ সালের ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান ( Sheikh Mujibur Rahman) গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। তাঁর ডাক নাম খোকা । তাঁর বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মায়ের নাম সায়েরা খাতুন । তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন গোপালগঞ্জ মিশন হাই স্কুল থেকে। এরপর তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বি.এ পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। তিনি বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ‘ঐতিহাসিক ৬ দফা’ (১৯৬৬) এর ঘোষক। তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জনক এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি। একাত্তরের ২৫ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের করাচি শহরের মিয়াওয়ালি কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এজন্য ১০ জানুয়ারি ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কালে বঙ্গবন্ধু ব্রিটেন ও ভারত সফর করেন ।
১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু ‘জুলিও কুরি’শান্তি’ পদকে ভূষিত হন। ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বঙ্গবন্ধু পদকটি গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে মার্কিন সাপ্তাহিক ‘Newsweek’ এর সাংবাদিক লোবেন জেঙ্কিন্স তাঁর প্রতিবেদনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির কবি (Poet of politics) বলে আখ্যায়িত করেন। ২০০৪ সালে বিবিসির শ্রোতা জরিপে বঙ্গবন্ধু ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ নির্বাচিত হন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ (The Unfinished Memoirs)। ফকরুল আলম গ্রন্থটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। মুক্তিযুদ্ধের ওপর লিখিত বঙ্গবন্ধুর অমর গ্রন্থ ‘আমার কিছু কথা’। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২১ জুন, ২০০৯ বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে রায় দেয়।
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ কি|ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বলতে কি বুঝায়
১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ (রহিতকরণ) বিল-১৯৯৬ পাস হয় । ১৪ নভেম্বর ১৯৯৬ রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হয় এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আইনি বাধা অপসারিত হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা|বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল কারণ কি
১৯৯৬ সালে ২ অক্টোবর ধানমণ্ডি থানায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এজাহার দায়ের করেন আ ফ ম মহিতুল ইসলাম। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকা জেলা দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল ১৯ জন আসামীর ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অতঃপর এ মামলার আপিল শুনানি হয় হাইকোর্টে যাতে মামলার দ্বিধাবিভক্ত রায় দেওয়া হয় । এ দ্বিধাবিভক্ত রায় তৃতীয় বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিমের বেঞ্চে গেলে তিনি ৩০ এপ্রিল ২০০১ তার রায়ে ১২ জন আসামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ৩ জনকে খালাস দেন। ৪ অক্টোবর ২০০৯ মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পাঁচজন বিচারপতিকে নিয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করা হয়। এ বেঞ্চ ১৯ নভেম্বর ২০০৯ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ১২ জন আসামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয় ।