বাংলাদেশে এককেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান। বর্তমান বাংলাদেশের প্রশাসনিক স্তরগুলো হলো(১) কেন্দ্রীয় প্রশাসন (২) স্থানীয় প্রশাসন (বিভাগ, জেলা, উপজেলা) এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবংবিভাগ। বাংলাদেশে ১৯৭৬ সালে স্থানীয় শাসন অর্ডিন্যান্স জারি হয় ।
কেন্দ্রীয় প্রশাসন : সেক্রেটারিয়েট বা সচিবালয় বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থার কেন্দ্রে অবস্থিত । সরকারি যাবতীয় সিদ্ধান্ত সর্বপ্রথম সচিবালয়ে গৃহীত হয়। সাধারণত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও তার বিভাগসমূহের অফিসগুলোকে যৌথভাবে সচিবালয় বলে । শাসন সংক্রান্ত এক বা একাধিক বিভাগ একটি মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত। একটি মন্ত্রণালয়ের প্রধান হলেন মন্ত্রী। আর সচিব (বা জ্যেষ্ঠ সচিব) হলেন মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের এবং প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের প্রধানকে মুখ্য সচিব বলে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সাথে
সংযুক্ত রয়েছে বিভাগ বা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের প্রধান হলেন মহা- পরিচালক । এছাড়া এসব অধিদপ্তরের অধীনে পূর্ণ বা আধা স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা, বোর্ড ও কর্পোরেশন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বর্তমানে ৪১ টি মন্ত্রণালয় এবং ২টি বিভাগ (মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) রয়েছে। ৪ ডিসেম্বর, ২০১১ বাংলাদেশের সর্বশেষ ২টি মন্ত্রণালয় গঠিত হয়। যথা- রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সচিবালয় হচ্ছে আমলাতান্ত্রিক। সচিবালয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত বিভাগে প্রেরিত হয়। এগুলো আবার জেলা প্রশাসনে এবং উপজেলা প্রশাসনে প্রেরিত হয়। সকল বিভাগ, দপ্তর এবং সংস্থাসমূহ সচিবালয়ের নিকট দায়ী।
বিভাগীয় প্রশাসন : কেন্দ্রের পরেই রয়েছে বাংলাদেশের বিভাগীয় প্রশাসনের অবস্থান । সমগ্র বাংলাদেশকে ৮টি বিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ। বিভাগীয় প্রশাসনের শীর্ষে অবস্থান করে একজন বিভাগীয় কমিশনার। তিনি একজন যুগ্ম সচিবের সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি।
জেলা প্রশাসন : জেলা প্রশাসন বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোর তৃতীয় স্তর। প্রত্যেক বিভাগ আবার কয়েকটি জেলায় বিভক্ত। বাংলাদেশে ৬৪টি জেলা রয়েছে। স্বাধীনতার পূর্বে বাংলাদেশে ১৯ টি জেলা ছিল। এদের বৃহত্তর জেলা বলা হয়।
যথা- ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, নোয়াখালী, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, পটুয়াখালী এবং বরিশাল। বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ৬৫তম জেলা ভৈরব। জেলা প্রশাসককে কেন্দ্র করে জেলার সমগ্র শাসন আবর্তিত হয়। তিনি একজন উপ-সচিবের সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি ।
উপজেলা প্রশাসন : প্রতিটি জেলা কয়েকটি উপজেলায় বিভক্ত। উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার । তিনি একজন সিনিয়র সহকারী-সচিবের সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাজ কি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নিয়োগ
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রশাসনিক বিভাগ যা কোনো মন্ত্রণালয়ের অধীন নয় । মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে এ বিভাগ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত । এই বিভাগের প্রশাসনিক প্রধানকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব (Cabinet secretary) বলে । মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রধান কাজ হলো- মন্ত্রিসভা এবং কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান, আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয় সাধন প্রভৃতি ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বদলীর আদেশ
১৯৮২ সালে সংস্থাপন বিভাগকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয় (Ministry of Establishment) করা হয়। ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় করা হয়। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন জনপ্রশাসন মন্ত্রণায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট।
বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাজ কি ও বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
Bangladesh Public Administration Training Centre – BPATC বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক বাছাইকৃত ক্যাডার ও উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে সাধারণ ও মৌলিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ১৯৮৪ সালে ঢাকার অদূরে সাভারে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র । প্রতিষ্ঠানের প্রধান হলেন রেক্টর ।