বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা টি বঙ্গবন্ধুর অবদান সহ ৪র্থ শ্রেনির জন্য একটি ও ৫ম শ্রেনির জন্য একটি মোট দুটি রচনা। একটি 300 শব্দের অন্যটি 200 শব্দের
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা pdf ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
সংকেত : সূচনা ২৫ মার্চ ১৯৭১ ০ বঙ্গবন্ধুর ডাক সৈনিক জনতার যুদ্ধ গু লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বিজয় অর্জন উপসংহার।
সূচনা : আমরা আজ স্বাধীন দেশের অধিবাসী। কিন্তু যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অসীম সাহসী দামাল তরুণের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাদের অবদানের কথা আমাদের ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যাঁরা মায়ের বুক শূন্য করে দেশের জন্য শাহাদাত বরণ করেছেন তাঁরা অমর ও চিরবরণীয়।
২৫ মার্চ ১৯৭১ : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হাজার হাজার বাঙালির রক্তে সিক্ত হয়ে যায় ঢাকার রাজপথ। তাই দেশ প্রেমিক ইস্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্ট, পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস এবং পুলিশ বাহিনির বাঙালি সদস্যরা নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারেননি। তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির ওপর। শত শত বাঙালি সৈনিক সেদিন অকাতরে প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেছেন বাংলার স্বাধীনতা সূর্যকে ছিনিয়ে আনার জন্য।
বঙ্গবন্ধুর ডাক : বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল সেদিন। বাংলার গ্রামে-গঞ্জের আনাচে কানাচে এবং দেশের বাইরে গিয়েও তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে। শেষ পর্যন্ত শত্রুদেরকে পর্যুদস্ত করেছে। দেশের তরুণ ছাত্র-ছাত্রী, বৃদ্ধ, যুবক-যুবতী, কৃষক-শ্রমিকসহ সব পেশার লোকই এককথায় ছিল মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে ১৯৭১ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি মৃত্যুবরণ করতে থাকে ও পিছু হটতে থাকে । সৈনিক জনতার যুদ্ধ : আমাদের মুক্তিবাহিনি ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে অতুলনীয় বীরত্ব প্রদর্শন করেছেন। অন্যদিকে সাধারণ জনতা শুধু প্রাণই দান করেনি, তারা নিরস্ত্র হয়েও পাকিস্তানি হানাদারদের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদেরই বুলেটে তাদেরকেই বিদ্ধ করে পরাজিত করেছে।
লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে : লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। বহু নারী হয়েছে নির্যাতিতা। তবুও এদেশের লোক দাসত্বের শৃঙ্খল বরণ করে নেয়নি। পাকিস্তানি বাহিনি যখন চরম মার খেয়ে দলে দলে মরতে লাগল, তখন বাধ্য হয়ে তারা আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মিত্র বাহিনির নিকট আত্মসমর্পণ করে।
বিজয় অর্জন : আত্মসমর্পণের সে ঐতিহাসিক দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সেদিন একটি বিরাট লাল সূর্য পূর্ব দিগন্তে উদিত হলো। বাঙালি জাতির বিজয় হলো সেদিন। স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নামক একটি দেশের অভ্যুদয় ঘটল।
উপসংহার : অসংখ্য নর-নারীর আত্মদানের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার রক্তরবি উদিত হলো। তাই আজ আমরা স্মরণ করি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীরদের। তাঁরা মহান, তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের আত্মা চিরঞ্জীব হয়ে থাক এই কামনাটি বাঙালি চিরদিন করবে। কবির ভাষায় বলতে হয়-
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার, ক্ষয় নাই ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের
ভূমিকা : স্বাধীনতা মানবজীবনের অমূল্য সম্পদ। স্বাধীনতার জন্য পৃথিবীর প্রতিটি জাতিকে কমবেশি রক্ত দিতে হয়েছে, জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি : ১৯৪৭ সালে ভারতবিভক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে। বাংলাদেশ ছিল (পূর্ব পাকিস্তান) পাকিস্তানের একটি প্রদেশ। স্বাধীনতার পর থেকেই নানাদিক থেকে আগ্রাসন শুরু হয় বাংলাদেশের ওপর। সবচেয়ে বড় আঘাত হানা হয় বাংলা ভাষার ওপর। বাংলাকে বাদ দিয়ে একমাত্র উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা হয়। কিন্তু বাঙালিরা তা মেনে না নিয়ে শুরু করে ভাষা আন্দোলন। ১৯৫২ সালে রফিক, জব্বার, সালাম, বরকতসহ আরও অনেকের প্রাণের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় আমাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা। এরপরও পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চালায়। শেষপর্যন্ত ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ চালায় ঘুমন্ত বাঙালিদের ওপর। হাজার হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায় সৃষ্টি হয় বাংলাদেশের বুকে। ফলে স্বাধীনতা যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে।
যুদ্ধের বিবরণ : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। ১০ এপ্রিল গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের সরকারের শপথ গ্রহণের পর কর্নেল আতাউল গনি ওসমানীতে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়। বাংলাদেশকে এগারটি সেক্টরে বিভক্ত করে ওসমানীর নেতৃত্বে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। নয় মাসের যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর হাতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি অভিজ্ঞ হানাদার বাহিনী। শেষপর্যন্ত তারা পর্যুদস্ত হয় এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। অগণিত বীর মুক্তিযুদ্ধোর জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়।
উপসংহার : পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সমস্ত ঘড়যন্ত্র ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের কাছে। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে অগণিত বীরযোদ্ধার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতার চূড়ান্ত বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে সগর্বে স্থান করে নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
আমাদের অন্যান্য রচনা :