মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা ক্লাস ৩ – ৬

রচনা

এখানে দুটি মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা আছে। নিজের পছন্দমত যে কোন একটি বেছে নেও

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য

অথবা,

মাতা পিতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব

সংকেত : সূচনা; সন্তানের প্রতি মাতা-পিতার অবদান; মাতা-পিতার প্রতি সন্তানে কর্তব্য; মাতা-পিতার আসন; পরিণতি ও উপসংহার।

সূচনা : পৃথিবীতে মাতা-পিতাই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ আপনজন। মাতা-পিতার স্নেহের কোনো তুলনা হয় না। প্রত্যেক ধর্মেই মাতা-পিতাকে সম্মান ও ভক্তি করতে বলা হয়েছে। ইসলাম ধর্মে আছে- মায়ের পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেশ্ত। তাই এমন শ্রদ্ধাভাজন মাতা-পিতার প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক।

সন্তানের প্রতি মাতা পিতার অবদান : মাতা-পিতার জন্য আমরা পৃথিবীতে আলোর পথ দেখতে পেয়েছি। জন্মের পর থেকে মাতা-পিতা আদর যত্নে আমাদেরকে লালন-পালন না করলে বেঁচে থাকাই সম্ভব হতো না। মাতা-পিতা নিজেরা না খেয়ে তার সন্তানকে খাওয়ান। নিজেরা কষ্ট করে সন্তানদেরকে নিরাপদে ও শান্তিতে রাখেন। বিপদ-আপদ থেকে তাঁরা সন্তানদেরকে আগলে রাখেন। তাই মাতা-পিতার কোনো তুলনা হয় না।

মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য : মাতা-পিতার প্রতি সন্তানের অনেক কর্তব্য রয়েছে। এর মধ্যে সর্বপ্রথম ও সর্বশ্রেষ্ঠ কর্তব্য মাতা-পিতাকে শ্রদ্ধা করা। মাতা-পিতা- কালো, পঙ্গু ও অশিক্ষিত হতে পারে, তবুও তাঁদের প্রতি বিন্দুমাত্রও অবহেলা করা যাবে না। সর্বদা তাঁদের প্রতি অনুগত থাকতে হবে। মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান কখনও সুখী হতে পারে না। তাই সন্তানের উচিত বৃদ্ধ মাতা-পিতাকে শিশুর মতো সেবাযত্ন করা এবং প্রতিপালন করা।

মাতা পিতার আসন : পৃথিবীতে প্রায় সব ধর্মেই মাতা-পিতাকে মেনে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মে মাকে স্বর্গের সাথে তুলনা করা হয়েছে। তাই যারা বেঁচে থাকতে মাতা-পিতার সন্তুষ্টি লাভে ব্যর্থ হয় তারা সবচেয়ে বড় হতভাগা। সেজন্য মাতা-পিতাকে সকল ধর্মেই সর্বোচ্চ সম্মান দান করা হয়েছে।

পরিণতি : মাতা পিতাকে দুঃখ কষ্ট না দিলে এবং তাদের আদেশ-উপদেশ মেনে চললে সন্তান জীবনে উন্নতি লাভ করতে পারে। অপরদিকে মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান জীবনে কখনও সুখী হতে পারে না।

উপসংহার : মাতা-পিতা আমাদের সবচেয়ে পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। আল্লাহর পরেই মাতা-পিতার স্থান। সুতরাং আমরা যদি ইহকাল ও পরকালের শান্তি ও কল্যাণ চাই, তা হলে মাতা-পিতার প্রতি কখনও অযত্ন ও অবহেলা করবো না।

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য

ভূমিকা : সন্তানের নিকট মাতাপিতার স্থান সবার ওপরে। মাতাপিতার মত প্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন আর কেউ সন্তানের কাছে নেই। মাতাপিতাই সন্তানের সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী ও সবচেয়ে আপন। তাদের নিকট সন্তানরা এত বেশি ঋণী যে, সে ঋণ এ জীবনে শোধ করা সন্তানদের পক্ষে সম্ভব নয়।

মাতাপিতার অবদান : মাতাপিতার কারণেই সন্তান এ পৃথিবীতে আসতে পারে। মাতা অতি কষ্টে সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেন। জন্মের পরও মায়ের কোলই সন্তানের প্রধান আশ্রয়। মায়ের দুধপান করেই সন্তান শৈশবে বেঁচে থাকে। সন্তানের লালন-পালনের জন্য মাতাপিতা কষ্ট ভোগ করেন। সন্তানের লেখাপড়ার জন্য মাতাপিতার চেষ্টা ও সাধনার শেষ নেই। সন্তান অসুস্থ হলে মাতাপিতা আহার-নিদ্রা ভুলে তার পাশে বসে থাকেন; সর্বস্ব ব্যয় করে তাঁরা সন্তানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলার জন্য মাতাপিতা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। সন্তানের ভরণ-পোষণের জন্য মাতাপিতার কষ্টের সীমা থাকে না। নিজে না খেয়ে হলেও তাঁরা সন্তানের জন্য আহার যোগান। সন্তানের প্রতি মাতাপিতার ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। মাতাপিতার এই ভালোবাসার ঋণ সন্তান কোনোদিন শোধ করতে পারবে না। মাতাপিতাই হচ্ছে সন্তানের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু-পরম আপনজন।

সন্তানের কর্তব্য : যে মাতাপিতা সন্তানের জন্য সীমাহীন কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেন, সে মাতাপিতার প্রতি সন্তানকেও অনেক কর্তব্য পালন করতে হয়। মাতাপিতার মতো শুভাকাঙ্ক্ষী পৃথিবীতে আর কেউ নেই। তাই তাঁদের প্রতি অনুগত থাকা, তাঁদের আদেশ পালন করা সন্তানদের প্রধান কর্তব্য। মাতাপিতা যা করতে বলেন তা করার চেষ্টা করা এবং যা করতে নিষেধ করেন তা না করা উচিত। এভাবে আদেশ পালন করলে সন্তানেরও মঙ্গল হয়, মাতাপিতাও সন্তুষ্ট থাকে। মাতাপিতা আশা করেন, তাঁদের সন্তান শিক্ষিত ও চরিত্রবান হোক। তাই নিজেদেরকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা এবং চরিত্রবান করে গড়ে তোলা সন্তানদের কর্তব্য। মাতাপিতা অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁদের সেবা করা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা সন্তানের অন্যতম কর্তব্য। মাতাপিতা বুড়ো হয়ে গেলে তাঁদেরকে ছেলেমেয়েদের ওপর নির্ভর করতে হয়। এ সময় তাঁদের যত্ন নেওয়া, তাঁদের সুখ-দুঃখের প্রতি খেয়াল রাখা ‘সন্তানদের উচিত। তাঁরা যাতে কষ্ট না পান, যাতে আনন্দে দিন কাটাতে পারেন, সেদিকে অবশ্যই দৃষ্টি রাখতে হবে। মাতাপিতার প্রতি কটূক্তি করা, কিংবা মনে কষ্ট পান এমন কোনো আচরণ করা সন্তানদের মোটেই উচিত নয়। মাতাপিতা শৈশবে যেভাবে আদর-যত্ন করে সন্তানদের বড় করে তুলেছেন, তেমনি বৃদ্ধ বয়সে তাঁদেরকে আদর-যত্নের মধ্যে রাখা সন্তানদের কর্তব্য। বৃদ্ধ মাতাপিতার ভরণ-পোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সন্তানদেরই নেওয়া উচিত। মাতাপিতা হঠাৎ কোনো ভুল-ত্রুটি করে ফেললে সে জন্য রাগ করা কিংবা কোনো খারাপ আচরণ করা সন্তানদের উচিত নয়।

দৃষ্টান্ত : মাতাপিতার অবাধ্য হয়ে জীবনে উন্নতি করতে পেরেছেন এমন দৃষ্টান্ত বিরল। পৃথিবীতে যাঁরা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন, যাঁরা স্মরণীয় হয়ে আছেন তাঁরা সকলেই মাতাপিতার প্রতি অনুগত ছিলেন। হযরত বায়েজিদ বোস্তামি, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, স্যার সৈয়দ আহমদ প্রমুখ মহাপুরুষদের মাতৃভক্তি ছিল অসাধারণ। যে সন্তান মাতাপিতার অবাধ্য তার পতন অবশ্যম্ভাবী।

উপসংহার : মাতাপিতা যত দিন বেঁচে আছেন তত দিন সন্তানরা হয়তো বুঝতে পারে না যে তাঁরা কত আপনজন। কিন্তু মাতা কিংবা পিতার মৃত্যু হলে তাঁদের অভাব সন্তানেরা মর্মে মর্মে বুঝতে পারে। মাতাপিতার প্রতি কর্তব্য পালন করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো তাঁরা যেভাবে চান সেভাবে নিজেদেরকে গড়ে তোলা। মাতাপিতার মুখে হাসি ফেটানোর চেষ্টা করাই সর্বপ্রধান কর্তব্য।

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা এর পাশাপাশি আমাদের অন্যান্য রচনা

অধ্যবসায় রচনা class 4 – 10 খুব সহজ

কম্পিউটার রচনা সকল শ্রেণির 3-10 easy

রচনা স্বদেশপ্রেম খুবই সহজ এবং সুন্দর

মাতা পিতার প্রতি কর্তব্য রচনা এ সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন জেনে নিন

পিতা-মাতার অধিকার রক্ষায় আইন ও আইনের প্রয়োগ



About author

saikat mondal

Welcome to www.banglashala.com. Banglashala is a unique address for Bengali subjects. banglashala is an online learning platform for Bengalis. So keep learning with us



1 Comment

Abhijit Das3:06 am

Good 👍👍👍

Reply

Leave a Reply

three + 8 =