প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা,(sheikh hasina) বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেত্রী। ১৯৪৭ সালে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার পরিবারকে বেশ কয়েকটি কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে একদল সেনা সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে হত্যা করে। সেই সময়ে শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। এর পরপরই শেখ হাসিনা রাজনৈতিক আশ্রয়ে বিদেশে চলে যান এবং দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটান।
১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে দলীয় প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক মঞ্চে তার সক্রিয় ভূমিকা শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার এই মেয়াদে তিনি দেশে বিভিন্ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম হাতে নেন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালান।
শেখ হাসিনার(sheikh hasina) নেতৃত্বে বাংলাদেশে গঠিত সরকার বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। তার সময়ে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্র্য হার কমেছে, এবং বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তার সময়ে বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশনের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে, যার ফলে দেশের প্রযুক্তিগত খাতে নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
শেখ হাসিনার(sheikh hasina) সময়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বেড়েছে এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও শিক্ষার হার বেড়েছে। স্বাস্থ্য খাতে মা ও শিশুমৃত্যুর হার কমেছে এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে।
শেখ হাসিনার(sheikh hasina) নেতৃত্বাধীন সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করে যার মাধ্যমে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও, রোহিঙ্গা সংকটের সময় তার সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মিয়ানমার থেকে আগত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।
অর্থনৈতিক খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশেষ করে, পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তার সরকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যেমন পদ্মা সেতু, যা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হবে।
তবে, শেখ হাসিনার(sheikh hasina) নেতৃত্বাধীন সরকার বিতর্কেরও সম্মুখীন হয়েছে। বিরোধী দলের অভিযোগ, তার সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করছে এবং রাজনৈতিক দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া, বিরোধীদলীয় নেতাদের গ্রেপ্তার এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগও রয়েছে তার সরকারের বিরুদ্ধে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও শেখ হাসিনা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক স্থাপনে কাজ করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তার নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রশংসিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কপ-২১ এবং অন্যান্য জলবায়ু সম্মেলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে।
শেখ হাসিনার(sheikh hasina) ব্যক্তিগত জীবনও রাজনৈতিক কর্মকা্ণে ভরপুর। তার দুই সন্তান – পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল – তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল। সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
শেখ হাসিনার(sheikh hasina) সময় বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি অর্জন করেছে। যেমন, দারিদ্র্য নিরসনে তার অবদানের জন্য তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও, তিনি নারী ক্ষমতায়নে তার অবদানের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও সংস্থা থেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
সমগ্র জীবনজুড়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছেন এবং সেই লক্ষ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে তা দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।
বর্তমানে শেখ হাসিনা(sheikh hasina) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার নেতৃত্বে দেশটি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও কতদূর এগিয়ে যাবে তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সমগ্র জাতি।